ঢাকা, শনিবার   ১০ মে ২০২৫

আজীবন নির্বাচনে অযোগ্য নওয়াজ শরীফ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৫১, ১৩ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৮:২৮, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

সরকারি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে আজীবনের জন্য অযোগ্য হলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। শুক্রবার সর্বোচ্চ আদালতের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে জারি করা এক রুলে জানায়, পাকিস্তানে সংবিধানের ৬২ (১) (এফ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেউ অযোগ্য ঘোষিত হলে তাকে আজীবনের জন্য অযোগ্য বিবেচনা করতে হবে। এই রুলের কারণে নওয়াজের পাশাপাশি তেহরিক ই ইনসাফ নেতা জাহাঙ্গীর তারিনও আজীবনের জন্য অযোগ্য হলেন। পনামা পেপারস-এর মামলায় ২০১৭ সালে ওই ৬২ ধারাতেই নওয়াজকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। দায়িত্ব ছাড়তে হয়েছিল তাকে। তবে ওই ধারায় অযোগ্যতার মেয়াদ নিয়ে অস্পষ্টতা থাকায় নওয়াজ আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন কিনা, তা নিয়ে বিভক্ত মতামত দিয়েছিলেন আইনজীবীরা। সুপ্রিম কোর্টের জারিকৃত রুলের কারণে সেই বিভক্তি দূর হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হলো। রায়কে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে প্রভাবশালী পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন আশঙ্কা জানিয়েছে, এই রুলের কারণে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসের পট পরিবর্তন হতে পারে

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট, নওয়াজসংবিধানের ৬২ (১) (এফ) অনুচ্ছেদ অনুসারে পাকিস্তান পার্লামেন্টের সদস্য হতে গেলে কোনও ব্যক্তিকে ‘সাদিক এবং আমিন’ (সৎ এবং ন্যায়নিষ্ঠ) হতে হবে। ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই এই অনুচ্ছেদের আওতায় বিচারপতি আসিফ সাইদ খোসার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ পানামা পেপারস মামলায় নওয়াজ শরিফকে অযোগ্য ঘোষণা করেছিল। তবে এই অযোগ্যতার মেয়াদ নিয়ে বিভক্ত মতামত দিয়েছিলেন আইন বিশ্লেষকরা। শুক্রবার (১৩ এপ্রিল)পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের রুলে বলা হয়, ৬২(১)(এফ) অনুচ্ছেদের আওতায় যারাই অযোগ্য ঘোষিত হবে তারা আজীবনের জন্য সরকারি কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনে নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হবেন। প্রধান বিচারপতি মিঞা সাকিব নিসারের নেতৃত্বে বিচারপতি শেখ আজমত সাইদ, বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল, বিচারপতি ইজাজুল আহসান এবং বিচারপতি সাজ্জাদ আলি শাহকে নিয়ে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এই আদেশ জারি করেন।।

৬২(১)(এফ) অনুচ্ছেদের আওতায় অযোগ্য ঘোষণার মেয়াদকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা ১৭টি আপিল ও পিটিশনের রায় ১৪ ফেব্রুয়ারি স্থগিত করে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। সর্বশেষ শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আশতার বেঞ্চকে বলেন, ৬২(১)(এফ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অযোগ্য ঘোষিতরা আজীবনের জন্য অযোগ্য হবেন কিনা তা বলা কিংবা সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া আদালতের কাজ নয়। তিনি যুক্তি দেন, এ সিদ্ধান্ত পার্লামেন্টে নেওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেছিলেন, ওই অনুচ্ছেদে অযোগ্য ঘোষণার মেয়াদ নেই। ভিন্ন ভিন্ন মামলা অনুযায়ী আদালত আলাদা সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

রায় ঘোষণার আগে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি মিঞা সাকিব নিসার বলেন, জনগণের জন্য ‘ভালো বৈশিষ্ট্যের নেতা’ প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল দুনিয়ার প্রভাবশালী রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং রাঘববোয়ালদের আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করে সাড়া ফেলে দেয় আলোচিত ‘পানামা পেপারস’। ফাঁস হওয়া ওই গোপন নথিতে অর্থ পাচারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছেলের নাম উঠে আসায় নিজ দেশে চাপের মুখে পড়েন তিনি। বিরোধী দলগুলো থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়। ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর নওয়াজ শরিফ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশে অবৈধ বিনিয়োগের অভিযোগ তদন্তে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। পানামা পেপারস প্রকাশের পর বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), জামায়াতে ইসলামিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত দেয় আদালত। ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই পানামা পেপারস কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার পর পদত্যাগ করেন নওয়াজ শরিফ।

তথ্যসূত্র: দ্য ডন।


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি