‘আলাস্কা বৈঠক ট্রাম্পের খ্যাতি নষ্ট করলো’
প্রকাশিত : ১১:২৮, ১৬ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১১:৩০, ১৬ আগস্ট ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে 'চুক্তির কারিগর' হিসেবে উপস্থাপন করার যে চেষ্টা করে আসছিলেন ‘আলাস্কা বৈঠক’ তার সেই অবস্থান নষ্ট করেছে।
বিবিসির উত্তর আমেরিকান সংবাদদাতা অ্যান্থনি জুরচার তার বিশ্লেষণে একথা বলেছেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্কোরেজ শহরের একটি সামরিক ঘাঁটিতে শুক্রবার বৈঠক করেন ট্রাম্প-পুতিন।
প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠকের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, "চুক্তি সই না হওয়া পর্যন্ত আসলে কোনো অর্জনই নেই"।
জুরচারের মতে, ট্রাম্পের এই বক্তব্যের মানে দাঁড়ায় আসলে এই বৈঠক থেকে কিছুই অর্জিত হয়নি, সংবাদ সম্মেলনে যেটিকে একটু ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে উত্তর দিয়েছেন ট্রাম্প।
বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শত শত সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। তাদের কোনো প্রশ্ন না নিয়েই সংবাদ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন উভয় নেতা।
এতদূর থেকে এসে দীর্ঘ বৈঠকের পর ট্রাম্প গণমাধ্যমের উদ্দেশে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটিও ছিল একেবারে অস্পষ্ট।
তবে এই বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্র ও ইউক্রেন হয়তো সাময়িকভাবে স্বস্তি পাবেন যে, এই বৈঠকে একপাক্ষিক কোনো ছাড় বা চুক্তি হয়নি যা ভবিষ্যতের আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই নিজেকে শান্তির দূত বা চুক্তির কারিগর হিসেবে তুলে ধরতে পছন্দ করতেন। কিন্তু আলাস্কা বৈঠকে শান্তি বা চুক্তির বার্তা নিয়ে ফিরতে পারেননি ট্রাম্প।
অন্যদিকে, বলা হচ্ছে এ নিয়ে পরবর্তী বৈঠক মস্কোতে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু সেই বৈঠকে জেলনস্কি থাকবেন কি-না, কিংবা কী চুক্তি হতে পারে সেখানে সেটি নিয়েও কোনো স্পষ্ট বার্তা নেই।
যদিও আলাস্কার এই আলোচনায় ট্রাম্পের চেয়ে রাশিয়া কিংবা ইউক্রেনের ঝুঁকি কম ছিল। তবুও এটি তার খ্যাতিতে আঘাত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা এই বৈঠকের আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, এই বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ২৫ শতাংশ।
তাছাড়া, পুতিন যখন সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন, তখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও ছিলেন চুপচাপ। এটি ওভাল অফিসের সাধারণ রুটিনের চেয়ে একেবারে আলাদা। কেননা, সেখানে সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্টই শুরুতেই বক্তব্য দিয়ে থাকেন।
যদিও মার্কিন মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেখানে তিনি এই বৈঠককে মূল্যায়ন করেছেন '১০–এ ১০' নম্বর দিয়ে। তিনি এটিও বলেছেন যে "আমাদের মধ্যে আলোচনা খুব ইতিবাচক হয়েছে"।
এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, ট্রাম্প কি রাশিয়ার ওপর তার হুমকি অনুযায়ী নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন? ফক্স নিউজের সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, "হয়তো দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে বিবেচনা করবো"।
তবে এর আগে তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন যে, যুদ্ধবিরতির জন্য রাশিয়া এগিয়ে না আসলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে।
এএইচ
আরও পড়ুন