আশুলিয়ায় সেই ৭ টুকরো লাশের মাথা উদ্ধার
প্রকাশিত : ২০:০২, ১৬ নভেম্বর ২০১৮

ঢাকার অদূরে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার একটি শাখা সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া মস্তকবিহীন ৭ টুকরো লাশের পরিচয় পাওয়ার পর এবার খন্ডিত মাথা (মস্তক) ওই এলাকার একটি কক্ষ হতে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি, চাকু, রক্তমাখা প্যান্ট-শার্ট, রক্তমাখা কাঁথা, ২টি মুঠোফোন, কিছু ব্যবহৃত সিম জব্দ করেছেন পুলিশ। তবে হত্যায় জড়িত মূল ঘাতকদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, গত ৯ নভেম্বরে নিখোঁজ হন মেহেদী হাসান টিপু। মস্তকবিহীন ৭ টুকরো লাশ পাওয়ার পরই নিখোঁজ টিপুর স্ত্রী মৃতদেহটির বর্ণনা দেন। তার দেয়া বিবরনের সাথে মিলিয়ে নিহতের পরিচয় সনাক্ত করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মানিক নামের একজনকে আটক করেন পুলিশ। আটক মানিক মুঠোফোনে গত ৯ নভেম্বর বাসা থেকে মেহেদী হাসানকে ডেকে নিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অপহরণের রাতেই মেহেদী হাসানকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার সাথে জড়িত বাকী আসামীদের আটকের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরো জানান, মানিক এর তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নিশ্চিন্তপুর মোহাম্মদ আলীর নতুন নির্মিত একটি কলোনীর বাবুল নামে এক ভাড়াটিয়ার কক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু, একটি চাপাতি, নিহত মেহেদীর ২টি মুঠোফোন, তার খন্ডিত মাথা, রক্তমাখা প্যান্ট-শার্ট, বাথরুমের ভিতর বালতিতে রাখা রক্তমাখা কাঁথা ও কিছু মোবাইল সিম উদ্ধার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
পুলিশ ধারণা করছে, হত্যাকারিরা পেশাদার খুনি। ঘটনায় বাবুলসহ হত্যায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তবে ঘটনাটি কি শুধু টাকার জন্য, না প্রেমঘটিত এ বিষয় তদন্ত সাপেক্ষে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলেও জানান পুলিশের এক কর্মকর্তা।
আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ জানান, ৯ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ থাকা টিপুর স্বজনরা থানায় লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ছুটে আসেন। পরে নিহতের স্ত্রী সম্পা বেগম মৃতদেহটি সনাক্ত করেন। পরে ১২ নভেম্বর রাতে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মানিক নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতকে আদালতে পাঠালে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। বর্তমানে সে আশুলিয়া থানায় পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ নভেম্বর সোমবার সকালে নিশ্চিন্তপুর এলাকার শাখা সড়কের পাশ থেকে মাথা বিহিন পলিথিনে মোড়ানো ৭টি মানবদেহের অঙ্গ উদ্ধারর করেন পুলিশ। নিহতের স্ত্রী সম্পা বেগম আশুলিয়া থানায় এসে মৃতদেহটি তার স্বামী মেহেদী হাসান টিপুর বলে সনাক্ত করেন। এর আগে আশুলিয়া থানায় ১০ নভেম্বর নিখোঁজ ডাইরী করেছিল স্ত্রী সম্পা বেগম। সেখানে একটি অচেনা নম্বর থেকে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। পরে পুলিশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানিক নামে একজনকে ওই এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
নিহত মেহেদি হাসান টিপু (২৫)। সে যশোরের বাঘারপাড়া থানাধীন অন্তরামপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকির ছেলে। সে স্থানীয় হামিম গ্রুপের শ্রমিক ছিল। টিপু নিশ্চিন্তপুর এলাকার পারভীন ভিলায় ভাড়া থাকতো অনন্ত গ্রুপের শ্রমিক স্ত্রী সম্পাকে নিয়ে। নিখোঁজের দিন সন্ধ্যায় মানিক নামে একজন টিপুকে ডেকে নিয়েছিল।
আরকে//
আরও পড়ুন