ঢাকা, বুধবার   ১৫ মে ২০২৪

‘কনকর্ডের ১৮তলা ভবন এতিমখানাকে দিতেই হবে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫১, ১২ মার্চ ২০১৮

রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার জায়গায় আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের তৈরি ১৮তলা ভবন এতিমখানাকে বুঝিয়ে দিতে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ সোমবার সকালে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে কনকর্ডের করা আপিল খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যর বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী এবং বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। এতিম খানার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ ওয়াই মশিউজ্জামান ও ব্যারিস্টার অনিক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

পরে ব্যারিস্টার অনিক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের আপিল খারিজ হয়ে যাওয়ায় যত দ্রুত সম্ভব এতিমখানাকে ওই ভবন বুঝিয়ে দিতে হবে।

এর আগে ২০১৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে জারি করা এক রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার জায়গায় আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা বিল্ডিং এতিমখানাকে হস্তান্তরের আদেশ দেন। একইসঙ্গে চার দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।

সেগুলো হলো- ক. আজিমপুর এতিমখানার সম্পত্তি সংরক্ষণ করতে হবে, খ. এতিমখানার সম্পত্তি হস্তান্তর সম্পর্কে ২০১৩ সালের ২২ জুলাইয়ের দলিল এবং ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিলের আমমোক্তারনামা দলিল বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ সেগুলো শুরু থেকেই বাতিল। গ. এতিমখানার জায়গায় কনকর্ডের তৈরি ১৮তলা বিল্ডিং এতিমখানার পক্ষে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এবং ঘ. কনকর্ডকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে স্থাপনা ও সম্পত্তি এতিমখানাকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। ব্যর্থতায় সরকারকে সম্পত্তি বুঝে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং এতিমখানার প্রয়োজনে ডেভেলপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ড।

রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ১৯০৯ সালে ঢাকার নবাব ‘সলিমুল্লাহ এতিমখানা’ স্থাপন
করে এবং পরবর্তী সময়ে সরকারের কাছ থেকে আজিমপুর সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন সময় জমি লিজ নিয়ে পরিচালনা করে আসছে।

২০০৩ সালের ২২ জুলাই এতিমখানার সভাপতি শামসুন্নাহার ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জি এ খান আহসান উল্লাহ এতিমখানার দুই বিঘা জমি ডেভলপার কোম্পানি কনকর্ডের কাছে হস্তান্তর করেন। এতিমখানার সম্পত্তি অবৈধ হস্তান্তর সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ পায়। পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর তা সংযুক্ত করে চারজন ছাত্রের পক্ষে রিট পিটিশন দায়ের করেন মনজিল মোরসেদ। পরবর্তী সময়ে ওই রিট পিটিশনে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) পক্ষভুক্ত হয়।

রিট আবেদনে বলা হয়, এতিমখানার সম্পত্তি সরকারে নিকট থেকে লিজ নেওয়া এবং লিজ চুক্তিতে এতিম খানার সম্প্রসারণের জন্য বিনামূল্যে দেওয়া হয় এবং শর্ত ছিল প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন ব্যতীত অন্য কোনো কাজে জমি ব্যবহার করা যাবে না। তার পরও এতিমখানার সভাপতি ও সেক্রেটারি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে আর্থিক লাভবান হয়ে এতিমখানার সম্পত্তি কনকর্ড গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি