ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ জুলাই ২০২৫

কোটা আন্দোলন: ঢাবি ভিসি ও প্রক্টর গুজব ছড়াচ্ছেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১৫, ১৯ মে ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

কোটা আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের নেত্রী এশার ওপর ‘হামলার’ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজন ছাত্রীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের নোটিশ জারির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, কোটা আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগ নেত্রী এশাকে সাধারণ ছাত্রীদের ভয়ভীতি দেখানো ও তাদের ওপর নির্যাতনের কথা স্বীকার করলেও এখন বলছেন উল্টো কথা। আর এর মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টর সাধারণ ছাত্রীদের হয়রানি করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ আনেন নেতারা।

কোটা আন্দোলন ইস্যুতে বর্তমান পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র নুরুল হক নুরু এ অভিযোগ করেন। এদিকে রমজান মাস ও সেশন জটের কথা বিবেচনা করে পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচী স্থগিত ঘোষণা করেছেন তারা। তবে পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি স্থগিত করলেও ক্লাস বর্জন কর্মসূচী চলবে বলে জানান ওই নেতা। আজ (১৯মে) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী নেতা নুরুল হক নুর।

নুরুল হক নুরু এ সময় বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমরা এ আশ্বাসের কোনো বাস্তবায়ন দেখছি না। বরং দেখা যাচ্ছে একদিকে সরকার আমাদের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসছে, আশ্বাস দিচ্ছে। আবার অন্য দিকে সরকারী দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা কর্মীরা বিভিন্ন ভাবে আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের হুমকি দিচ্ছে, ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে নুরুল হক নুর দাবি করেন, গত ১৬ তারিখ রাতে তার রুমে হামলা করা হয়। নিরাপত্তাহীনতায় কারণে তিনি শাহবাগ থানায় জিডি করতে যান। শাহবাগ থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা তার জিডি নেননি, বরং তিনি বলেন জিডি নিতে হলে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে। নুরুল হক নুর বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমাদের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়েছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তারাও আমাদেরকে কোনো প্রকার আশ্বস্ত করেন নি।

নুরুল হক নুর এ সময় বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩১ নং অনুচ্ছেদে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকারের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু আমাদেরকে সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা শুধু বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের জন্য নয় বরং দেশ ও জাতির জন্য লজ্জাজনক।

নুরুল হক নুর আরও অভিযোগ করেন, ৯ এপ্রিল রাতে সুফিয়া কামাল হলে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর নিজেরা বলেছেন এশা নির্যাতনকারী। সে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ভয়ভীতি দেখিয়েছে। তার প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যার ও ভিসি স্যার তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেছিল। কিন্তু কী অদৃশ্য কারণে রাতের বেলা যে কথা বলেছেন সকাল বেলা সে কথাকে ঘুরিয়ে নিয়ে বললেন, না এটা সে করেনি। বরং দেখলাম এশাকে হেনস্থা করার অভিযোগে ২৫ জন ছাত্রীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সাধারণর ছাত্রীদের হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই নোটিশ দিয়েছে।

নুরুল হক নুর এসময় বলেন, বলা হচ্ছে অসত্য ও গুজব ছড়ানোর জন্য ফেসবুক স্ট্যাটাস দিচ্ছে ছাত্রীরা। আমি বলবো, ছাত্রীরা যদি গুজব ছড়ায় তাহলে আমাদের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার ও প্রক্টর স্যার গুজবের মহানায়ক। তারা সকল মিডিয়াতে শিকার গিয়েছিলেন যে, এই ছাত্রী নির্যাতন করেছে এবং এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে বহিষ্কার করে। প্রশ্ন থেকে যায় তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা প্রতিষ্ঠান সত্য তথ্য উদঘাটন না করে কিসের ভিত্তিতে সেদিন বহিষ্কার করেছিল? নাকি ভিসি স্যার ও প্রক্টর স্যার কোনো বিশেষ মহলের চাপে সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করছে তা জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে।

এএ/ এমজে


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি