ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

গৃহযুদ্ধের বলি ইয়েমেনের শিশুরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:২৫, ২৩ আগস্ট ২০১৭

সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে ইয়েমেনের হুদাদিয়াহ বন্দর। যে বন্দর দিয়ে আসত দেশটির ৯৫ শতাংশ খাবার। এ প্রেক্ষাপটে দেশটিতে ব্যাপক খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, বন্দরটি ব্যবহারের উপযোগী না থাকলে ইয়েমেনের লাখ লাখ শিশু না খেয়ে মারা যাবে।

হুদাদিয়াহর প্রধান হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হতে যাচ্ছে। আমরা ক্রমাগত অপুষ্টিতে ভোগা শিশু দেখতে শুরু করেছি। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা কেবল দরিদ্র পরিবার থেকেই আসছে না; মধ্যবিত্ত পরিবারের শিশুদেরও আমরা চরম অপুষ্টিতে ভুগতে দেখছি।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেন, খাবারের অভাবে ইয়েমেনের লাখো শিশুর মৃত্যু ঘটবে। যুদ্ধের অস্ত্র খাবার হওয়া উচিত নয়। খাবার হলো শান্তির অস্ত্র।

ডেভিড বিসলে আরো বলেন, হুদাদিয়াহ বন্দরে সৌদি আরব ও তাদের মিত্ররা বোমা হামলা করেছে। আমরা তাদের বোমা হামলা না করতে অনুরোধ করেছিলাম, বন্দরটি ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কারণ, এই বন্দর দিয়ে ৯৫ শতাংশ খাবার আমদানি হয়ে থাকে। যা দিয়ে সাধারণ মানুষের খাবারের চাহিদা মেটানো হয়। আমরা তাদের আরও বলেছিলাম, বোমা বর্ষণের কারণে বন্দরটি যদি ব্যবহারের উপযোগী না থাকে, তবে আক্ষরিক অর্থে লাখো শিশুসহ কোটি খানেক লোক না খেয়ে মারা যাবে।

এদিকে, সৌদি জোটের ক্রমাগত হামলার কারণে ইয়েমেনে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে। গৃহযুদ্ধে ইয়েমেনের স্বাস্থ্য, পানি ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, কলেরায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ জন প্রাণ হারিয়েছে। যার এক-চতুর্থাংশই শিশু। দেশটিতে কলেরায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

পানিবাহিত এ রোগ সহজে নিরাময়যোগ্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে সবার জন্য চিকিৎসা নিশ্চিত করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। চলতি বছর এপ্রিলে ইয়েমেনে কলেরাকে মহামারি ঘোষণা করা হয়। কলেরার পাশাপাশি দুর্ভিক্ষের মতো মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে ইয়েমেন। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা হাসপাতালে গিয়েও বাঁচতে পারছে না। হাসপাতালে বিদ্যুৎ নেই। অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি সব ধরনের চিকিৎসা যন্ত্রপাতি বন্ধ রয়েছে।

ইয়েমেনে ২০১৫ সালের মার্চে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে এ পর্যন্ত আট হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। শিয়া হুতি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করে প্রেসিডেন্ট আবেদ রাব্বো মানসুর হাদিকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব দেশগুলোর জোট সুন্নি শাসক হাদির পক্ষ নিয়ে হুতিদের বিরুদ্ধে লড়ছে। অপরদিকে, ইরান হুতিদের সমর্থন দিচ্ছে। সূত্র : বিবিসি।

ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি