গ্যাসের অভাবে অনিশ্চয়তার মুখে মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্র
প্রকাশিত : ১৯:০৬, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

গ্যাসের অভাবে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে জাপানভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি জাপান এনার্জি ফর এ নিউ এরা’র (জেরা) মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে, একই সময়ে গড়ে ওঠা অন্য দুটি কোম্পানিকে প্রতিদিন চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করলেও জেরার বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে রহস্যজনক কারণে গ্যাস দিচ্ছে না। ফলে গ্যাসের অভাবে হুঁমকির মুখে পড়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের বন্ধুরাষ্ট্র জাপানের বিনিয়োগ।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের জাপানের এই কোম্পানি মেঘনাঘাট যৌথ জ্বালানী (কম্বাইন্ড সাইকেল) নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরু করে। বাণিজ্যিক অপারেশন অর্জনের জন্য গত ২৬ অক্টোবর পরীক্ষামূলক উৎপাদনের কার্যক্রমও শেষ করে। কিন্তু তিতাস থেকে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চয়তা না পাওয়ায় বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারছে না কেন্দ্রটি। এরইমধ্যে এ প্রকল্পে জেরা ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। প্রকল্পটির বিনিয়োগে জেরা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোপারেশনসহ একাধিক জাপানিজ ব্যাংক ঋণ নিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে একই সময়ে গড়ে ওঠা সামিট ও ইউনিকের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন শুরু করেছে। অথচ সব রকমের প্রস্তুতি থাকার পরও অদৃশ্য কারণে জাপানের বিনিয়োগের গড়ে ওঠা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এখনো উৎপাদনে যেতে পারেনি।
জানা গেছে, মেঘনাঘাটে সামিট মেঘনাঘাট-২ বিদ্যুৎকেন্দ্র চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল এবং ইউনিক মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্র চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি উৎপাদন শুরু করেছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে জেরা মেঘনাঘাটে গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি। ফলে প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না হওয়ায় তারা বাণিজ্যিক উৎপাদনে (সিওডি) যেতে পারছে না। কেন্দ্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে না পারলেও জেরাকে গুণতে হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ঋণের কিস্তি। সম্প্রতি জেরার পক্ষ থেকে অন্তবর্তী সরকারের কাছে গ্যাস সরবরাহ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। চুক্তি থাকার পরেও গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে না এই প্রতিষ্ঠানে।
জ্বালানী খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করেও প্রয়োজনীয় গ্যাস পাচ্ছে না। এই অবস্থায় বাংলাদেশে জাপানিজ বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা যেতে পারে এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগে তারা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। তারা বলছেন, শিগগির কেন্দ্রটি চালু করতে চুক্তি অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা প্রয়োজন।
জেরা মেঘনা ঘাট পাওয়ার লিমিটিডের হেড অফ কন্ট্রাক্টস এন্ড কমার্সিয়াল স্মিতেশ বৈদ্য বলেছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বানিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারবে যদি নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ করা হয়। তিনি আরো জনান, আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এই প্রকল্পটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর, অত্যন্ত কর্মদক্ষ টার্বাইন এবং প্রতিযোগিতামূলক দামে বাংলাদেশের জাতীয় পাওয়ার গ্রিডে যুক্ত হবে। আমাদের বিশ্বাস বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই কেন্দ্রটি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।
এমবি
আরও পড়ুন