ঢাকা, শনিবার   ১৮ মে ২০২৪

জমে ওঠেছে ‘মোদি হঠাও’ স্লোগান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৮, ১৯ মার্চ ২০১৮

‘মোদি হঠাও’ স্লোগান ভারতের মধ্য-বামপন্থী রাজনৈতিক দল কংগ্রেস শুরু করলেও এবার তা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মোদির একসময়ের ঘনিষ্ট জোট শিবসেনাও লুফে নিয়েছে। এখন প্রতিটি সমাবেশে মোদি হঠাও স্লোগান বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে এখন সবচেয়ে বেশি সোচ্চার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত সপ্তাহে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বাড়িতে বিরোধী দলগুলোর নৈশভোজে অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানেও মোদি হঠাও স্লোগান বারবার উচ্চারিত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। ওই নৈশভোজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অংশ না নিলেও তার দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এরপরই মমতা প্রকাশ্যে মোদি হঠাও আন্দোলনে নেমেছেন।

এর আগেও বিজেপি ও মোদির রাজনৈতিক কূটচাল নিয়ে মন্তব্য করে আসলেও এবার প্রকাশ্যে বিরোধী জোট গঠনের মাধ্যমে বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদিকে হঠানোর আহ্বান জানাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকালও এক সমাবেশে মমতা বলেন, মোদি দেশের অকল্যাণের প্রতীক। তিনি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। ভোটব্যাংকের রাজনীতি করছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করছেন। সাম্প্রদায়িকতা উসকে দিচ্ছেন। ভারতের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। তাই এখনো মোদিকে গদিছাড়া করতে না পারলে দেশকে বড় ধরণের খেসারত দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

২০১৯ সালের মধ্যেই মোদি ও তার জোটকে ফিনিশ করতে বিরোধী দলগুলোকে একখাট্টা হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শুধু মমতা কেন, এখন মোদির একেবারে কাছের শরিক দল মহারাষ্ট্রের শিবসেনাও নেমেছে বিরোধিতায়। তারা বলছে, আর বিজেপি বা মোদিকে সমর্থন নয়। বিজেপি তার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য, রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে আসছেন, তার কিছুই বাস্তবায়ন করছেন না তিনি।


এদিকে কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে এক হাত নিয়েছেন। বিজেপির দুর্নীতি ও ধর্মীয় বিভেদ তৈরির বিষয়টি ইতোমধ্যে রাহুল জনগণের সামনে আনতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য যে বিশ্বাসযোগ্যতা ও সক্ষমতা অর্জন দরকার, তাতে খানিকটা পিছিয়ে রয়েছেন কংগ্রেস। তাই এই মুহূর্তে বিরোধীদলগুলোর জোট সরকার গঠন করলেও রাহুল গান্ধী নয়। বরং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহারাষ্ট্রের এনসিপির নেতা সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শারদ পাওয়ার এবং উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বহুজন সমাজপার্টির নেত্রী মায়াবতী ভারতে ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।

গত বুধবার প্রকাশিত ভারতের উত্তর প্রদেশের দুটি এবং বিহারের একটি লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে বিজেপির পরাজয় বিরোধীদের মনোবল দৃঢ় করেছে। এর থেকে পরিষ্কার হয়েছে, দেশের মানুষ এখন মোদি-ম্যাজিক থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর সংসদীয় শক্তির বর্তমান পরিস্থিতি বদলে যাবে। আসনসংখ্যাও ভিন্ন হবে। বাড়বে কংগ্রেসের আসন। কমবে বিজেপির আসন।

কংগ্রেস নেতারাও এগোচ্ছেন মমতার তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের প্রক্রিয়ার পথ ধরে। তৃতীয় ফ্রন্টে উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব ও বহুজন সমাজপার্টির নেতা মায়াবতীও আসছেন। জম্মু ও কাশ্মীরের পিডিপি–দলীয় মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতিও সংকেত দিয়েছে এনডিএ থেকে বেরিয়ে আসার। ফলে দিনে দিনে যে মোদিবিরোধী শক্তি জোরদার হচ্ছে, তা এখন স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এসব ঘটনায় বিজেপির মোদি-ম্যাজিক এখন ফিকে হয়ে যাচ্ছে। তাই সবার কণ্ঠেই এক স্লোগান হঠাও মোদি, হঠাও বিজেপি।

সূত্র: আনন্দবাজার, সংবাদ, এনডিটিভি
এমজে/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি