ঢাকা, শনিবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ অভিহিত করে হুমকি দিলেন ট্রাম্প

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১৩, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কিকে স্বৈরাচার বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, স্বৈরশাসক জেলেনস্কির দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত, নয়তো তার দেশের আর কিছু অবশিষ্ট থাকবে না।

২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ সামরিক আগ্রাসনের জন্য ইউক্রেনই দায়ী — ট্রাম্পের এমন ইঙ্গিতের পর জেলেনস্কি প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার প্রচারমাধ্যমের বিভ্রান্তিকর তথ্যের ফাঁদে পড়েছেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর ট্রাম্প জেলেনস্কির বিষয়ে এমন মন্তব্য করলেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, 'নির্বাচনবিহীন স্বৈরাচারী জেলেনস্কির দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করা উচিত, নতুবা তার দেশ বলে আর কিছু অবশিষ্ট থাকবে না।'

এর প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা এক এক্স পোস্টে বলেন, 'কেউ আমাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে পারবে না। আমরা আমাদের অস্তিত্বের অধিকার রক্ষা করব।'

প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির পাঁচ বছরের মেয়াদ ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া দেশটিতে আক্রমণের পর ইউক্রেন সামরিক আইন জারি করে, যার ফলে রাষ্ট্রপতি ও সংসদীয় নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়।

বুধবার কিয়েভে ট্রাম্পের ইউক্রেনবিষয়ক উপদেষ্টা কিথ কেলগের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ট্রাম্পের দল যেন ইউক্রেন সম্পর্কে 'আরও সত্য' জানতে পারে, তিনি সেটাই চান। এর একদিন আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের 'কখনোই যুদ্ধ শুরু করা উচিত হয়নি'।

জেলেনস্কি ট্রাম্পের দাবি নাকচ করে বলেন, তার অ্যাপ্রুভাল রেটিং মাত্র ৪ শতাংশ — এমন তথ্য রাশিয়ার বিভ্রান্তিকর প্রচারণার অংশ এবং তাকে অপসারণের যেকোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।

'আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে এই পরিসংখ্যান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প... দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই ভুল তথ্যের মধ্যে বাস করছেন,' ইউক্রেনিয়ান টিভিকে বলেন জেলেনস্কি।

ফেব্রুয়ারির শুরুতে কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির জরিপে দেখা যায়, ৫৭ শতাংশ ইউক্রেনীয় জেলেনস্কির ওপর আস্থা রাখেন।

ট্রাম্প তার নতুন মেয়াদের এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ইউক্রেন ও রাশিয়া সম্পর্কিত মার্কিন নীতির বিরোধিতা করেছেন। ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তাদের আলোচনার মাধ্যমে ওয়াশিংটনের রাশিয়াকে কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টায়ও সমাপ্তি টানছে নতুন ট্রাম্প প্রশাসন।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি এ মাসেই পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। তবে ক্রেমলিন বলেছে, এই বৈঠকের প্রস্তুতির জন্য আরও সময় প্রয়োজন। অন্যদিকে, রাশিয়া আশা করছে, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের শুরুতেই কয়েকটি মার্কিন কোম্পানি রাশিয়ায় পুনরায় ব্যবসা শুরু করবে।

বুধবার মস্কোয় পুতিন বলেন, ইউক্রেনকে শান্তি আলোচনার বাইরে রাখা হবে না। তবে সফল আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন ও মস্কোর পারস্পরিক বিশ্বাস বাড়ানো জরুরি।

তিন বছর ধরে চলা সংঘাতের অবসানে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক আলোচনা করেছে। এর একদিন পর পুতিন বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে একটি শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করতে সময় লাগবে। যদিও উভয় নেতা এ বৈঠক চাচ্ছেন।

'কিন্তু পরিস্থিতি এমন নয় যে, শুধু বসে চা-কফি পান করে ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বললেই হবে,' টেলিভিশনে প্রচারিত একটি বক্তৃতায় বলতে শোনা যায় পুতিনকে।

তিনি বলেন, 'আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, উভয় পক্ষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু ইউক্রেন সংকট নয়, অন্যান্য বিষয়ও রয়েছে, যাতে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো যায়।'

মঙ্গলবার সৌদি আরবের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় সরকারগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এতে তাদের উদ্বেগ বেড়েছে যে, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের নিরাপত্তা স্বার্থ উপেক্ষা করে চুক্তিতে পৌঁছাতে পারে।

পুতিন জোর দিয়ে বলেন, কেউ ইউক্রেনকে আলোচনার বাইরে রাখছে না। একই সঙ্গে তিনি 'হিস্টিরিয়া-গ্রস্ত' প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজন নেই বলেও মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প বলেছেন, ইউরোপকে যেকোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। এদিকে জেলেনস্কি প্রস্তাব করেছেন, মার্কিন নিরাপত্তার নিশ্চয়তার বিনিময়ে মার্কিন কোম্পানিগুলোকে ইউক্রেনে মূল্যবান খনিজ উত্তোলনের অধিকার দেওয়া যেতে পারে। তবে, তিনি এ-ও ইঙ্গিত দিয়েছেন, ট্রাম্প এ বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

 

এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি