ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪

দুর্গাপূজা নিয়ে ডিএমপির যত নির্দেশনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২৬, ১৬ অক্টোবর ২০২০ | আপডেট: ১২:৩৩, ১৬ অক্টোবর ২০২০

ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার)। 

ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার)। 

ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মিছিল ও শোভাযাত্রা না করার বিষয়ে সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার)। 

মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার রুখতে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মেনে ধর্মীয় অন্যান্য অনুষ্ঠান পালন করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর এলাকার নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্তে সমন্বয় সভায় এ কথা বলেন তিনি।

ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত সকলকে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, করোনার কারণে বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত আকারে করা হচ্ছে। অনুষ্ঠান স্থলে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দিবেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে দর্শনার্থীদের পূজা মন্ডপে প্রবেশের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এর সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপসমূহে কোভিড আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়া পুলিশ সদস্যরা ডিউটিতে নিয়োজিত থাকবে।

সমন্বয় সভায় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছেঃ

১। দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির সময়, পূজা চলাকালীন ও বিসর্জনের সময় মোবাইল পেট্রোলের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

২। ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এলাকা ভিত্তিক পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করবেন।

৩। পূজা মন্ডপ ও আশেপাশে পকেটমার, ছিনতাই ও ইভটিজিং প্রতিরোধে পুলিশের টহল ডিউটি নিয়োজিত থাকবে।

৪। দুর্গাপূজার এই সময়টা সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং করা হবে।

৫। গুরুত্ব বিবেচনায় পূজা মন্ডপগুলো ডগ স্কোয়াড ও বোম ডিসোপোজাল ইউনিট দিয়ে সুইপিং করানো হবে।

পূজা মন্ডপ কেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাঃ

১। চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রাস্তায় কোন ধরনের মেলা বসতে দেওয়া হবে না।

২। রমনা কালী মন্দিরের সামনের রাস্তায় মেট্রো রেলের কাজ চলমান থাকায় বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৩। বিসর্জনের দিন যে সকল রুট দিয়ে বিসর্জনের জন্য প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হবে সে সকল সড়কে রাস্তা/ ফুটপাতে হকার বসতে, রাস্তায় কোন প্রকার মালামাল লোড ও আনলোড করতে এবং কোন যানবাহন পার্কিং করতে দেয়া যাবে না।

পূজামন্ডপ কেন্দ্রিক আয়োজকদের প্রতি নির্দেশনাঃ

১। পূজা মন্ডপে প্রবেশপথে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেসিন, পানির ট্যাংক, সাবান এবং পৃথকভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা, থার্মাল স্ক্যানার ও জীবাণুনাশক চেম্বার স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।

২। কোনক্রমেই মাস্ক ছাড়া কাউকে পূজা মন্ডপে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।

৩। পূজা মন্ডপগুলোতে সামাজিক দূরত্ব কমপক্ষে ৩ ফুট কঠোরভাবে বজায় রাখতে প্রয়োজনে মন্ডপের অভ্যন্তরে ফ্লোর মার্কিং করার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪। পূজা মন্ডপে পৃথক প্রবেশ ও বাহির গেইট, আর্চওয়ে, সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং ভিডিও রেকর্ডিং নিশ্চিত করাসহ মেটাল ডিটেকটর দ্বারা যথাযথভাবে দেহ তল্লাশীর জন্য, পর্যাপ্ত পুরুষ ও নারী স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে।

৫। পূজা মন্ডপগুলোতে একমুখী চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।

৬। করোনাকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের পূজা মন্ডপে আসতে নিরুৎসাহিত করতে হবে।

৭। শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্বোধন উপলক্ষে সীমিত লোক সমাগম করে অনুষ্ঠান করতে হবে।

৮। ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া এবং অনলাইনে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান করা যেতে পারে।

৯। পূজা শেষে লোক সমাগম করে কোন সমাপনী অনুষ্ঠান করা যাবে না।

১০। পূজা মন্ডপে পর্যাপ্ত আলো ও জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেই সাথে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট, ময়লার ঝুঁড়ি ও নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে।

১১। পূজা উপলক্ষে কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা, সার্কাস ইত্যাদি আয়োজন করা যাবে না এবং উচ্চ শব্দে বাজনা বাজানো নিরুৎসাহিত করাসহ পটকা ও আতোশবাজি না ফুটানো নিশ্চিত করতে হবে।

১২। শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা বিসর্জন পরিহার করতে হবে এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা।

১৩। শুধুমাত্র বিসর্জনকালীন প্রতিমা বহন করার জন্য ১টি ট্রাকে নূন্যতম সংখ্যক লোক থাকবে। এছাড়া অতিরিক্ত ট্রাক/গাড়ি বা লোক থাকতে পারবে না।

১৪। সন্ধ্যা ১৮.০০ টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৫। প্রতিমা নির্মান স্থান, পূজা মন্ডপসহ সকল স্থানে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, স্বেচ্ছাসেবকদের এসবি দ্বারা ভেটিং করানো ও তালিকা সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ এবং আলাদা পোষাক, পরিচয়পত্র ও আর্মড ব্যান্ড প্রদান করতে হবে।

উক্ত সমন্বয় সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস, র‌্যাব, আনসার এর প্রতিনিধিগণ এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি ও বাংলাদেশ রামকৃষ্ণ মিশন এর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে আগামী ২২ অক্টোবর ২০২০ তারিখ শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়ে ২৬ অক্টোবর বিজয়া দশমী এবং বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি