ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

দেশে কর্মসংস্থানের ৭৫ শতাংশই অরক্ষিত: আইএলও

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২৯, ২১ মে ২০১৮

বাংলাদেশে মোট কর্মসংস্থানের ৭৫ দশমিক ২ শতাংশই অরক্ষিত। এর মধ্যে ৫২ দশমিক ৭ শতাংশ মূলত আত্মকর্মসংস্থান। বাকি ২২ দশমিক ৬ শতাংশ হচ্ছে পারিবারিক কর্মসংস্থান। অরক্ষিত ও অনানুষ্ঠানিক এসব কর্মসংস্থানে নিযুক্তদের দায়িত্ব কম, আয়ের নিরাপত্তাও কম। টেকসই ও পরিবেশবান্ধব কর্মসংস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

আইএলওর ওই প্রতিবেদনের আরো বলা হয়েছে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ৭৫ শতাংশের উপরে অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান রয়েছে নেপাল, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামে। অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা তিনটি দেশ হলো নেপাল, কম্বোডিয়া ও বাংলাদেশ।

দেশে অরক্ষিত কর্মসংস্থানের কথা এসেছে সরকারের শ্রমশক্তি জরিপেও। শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৬-১৭ অনুযায়ী, কর্মে নিয়োজিত শ্রমশক্তির ৮৫ দশমিক ১ শতাংশই অনানুষ্ঠানিক খাতে নিযুক্ত। কৃষি খাতে নিয়োজিত শ্রমশক্তির ৯৫ দশমিক ৪, শিল্প খাতে ৮৯ দশমিক ৯ এবং সেবা খাতে এখনো ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মী অনানুষ্ঠানিকভাবে নিযুক্ত বলে জরিপে উল্লেখ করা হয়।

আইএলও গত সপ্তাহে ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল আউটলুক ২০১৮: গ্রিনিং উইথ জবস শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জেনেভা থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনটির বাংলাদেশ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাক্ট শিটস অংশে দেশে কর্মসংস্থানের গতি-প্রকৃতির চিত্র উঠে এসেছে। ফ্যাক্ট শিটসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশে মোট জনগোষ্ঠীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ। আর কর্মক্ষম জনসংখ্যা অনুপাতে কর্মসংস্থানের হার ৫৯ দশমিক ৮ শতাংশ। বেকারত্বের হার ৪ শতাংশ। এর মধ্যে তরুণ জনগোষ্ঠীর বেকারত্বের হার ১০ দশমিক ৫ শতাংশ।

আইএলও ফ্যাক্ট শিটের তথ্যমতে, বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের কর্মসংস্থান কৃষি ও সেবা খাতে ৪০ শতাংশের কিছু বেশি। আর শিল্প খাতে কর্মসংস্থান হচ্ছে ২০ শতাংশের। দক্ষতার মান বিচারে উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন কর্মসংস্থান ২০ শতাংশেরও কম। মাঝারি দক্ষতার কর্মসংস্থান ৬০ শতাংশের কিছু বেশি। আর নিম্ন দক্ষতার কর্মসংস্থান ২২ শতাংশের মতো।

দেশের টেকসই কর্মসংস্থান পরিস্থিতি আলোকপাত করতে আইএলও পাঁচটি বিষয় বিবেচনায় নিয়েছে। এর মধ্যে আছে— পরিবেশ কর্মসংস্থান, দক্ষতার মাত্রা, কাজের দুর্বলতা, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে কর্মসংস্থান এবং পরিবেশগত পারফরম্যান্স সূচক।  সংস্থাটি জানিয়েছে, পরিবেশবান্ধব অর্থনীতির অনুকূল নীতি বাস্তবায়ন হলে ২০৩০ সালের মধ্যে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীর অঞ্চলে ১ কোটি ৪০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান হবে। এগুলো হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং টেকসই নির্মাণ, উৎপাদন ও কৃষি খাতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় চার কোটি পূর্ণকালীন কর্মীর উৎপাদনশীলতা বার্ষিক ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হারে কমবে। কৃষি খাতে এর প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি। তাপমাত্রা ও উষ্ণতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের কৃষকদের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

আইএলওর উপমহাপরিচালক ডেবোরাহ গ্রিনফিল্ড বলেছেন, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রগুলো স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও সেবার ওপর নির্ভর করে। সবুজ বা পরিবেশবান্ধব অর্থনীতি লাখো মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বেরোনোর পথ দেখাতে পারে। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উন্নত জীবিকাও নিশ্চিত করতে পারে।

আরকে// এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি