ঢাকা, শুক্রবার   ০৩ অক্টোবর ২০২৫

পলাতক ৮১ পুলিশ কর্মকর্তাকে ফেরাতে ইন্টারপোলের দ্বারস্থ এনসিবি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৪৫, ৩ অক্টোবর ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তারা কর্মস্থল ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এখনও অন্তত ৮১ জন পুলিশ সদস্য পলাতক। বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সাহায্য চেয়ে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছে।

এই তালিকায় রয়েছে ডিআইজি থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত সব স্তরের কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে মাত্র ১৫ জনের অবস্থান জানা গেছে। 

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, অবস্থান জানা ১৫ জনের মধ্যে রয়েছেন অতিরিক্ত আইজিপি (বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত) মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার এবং ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হারুন অর রশীদের যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের উডল্যান্ড শহরে তোলা একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, হারুন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন, একই দেশে অবস্থান করছেন মনিরুল ইসলাম। সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান যুক্তরাজ্যে, আর প্রলয় কুমার জোয়ারদার ও সৈয়দ নুরুল ইসলাম ভারতের কোনও স্থানে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. বাহারুল আলম জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে সরাসরি জড়িত অনেক পুলিশ সদস্য বিদেশে পালিয়ে রয়েছেন। দেশে যারা আছেন তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিদেশে থাকা কয়েকজনের অবস্থানও শনাক্ত হয়েছে। তাদের ফিরিয়ে আনতে এবং শনাক্ত করতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই কর্মকর্তারা দলের স্বার্থে কাজ করতেন। এখন বিদেশে থাকা অবস্থাতেও তারা পতিত নেতাদের সহযোগিতায় দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন, যাতে সরকারের পতনের পর আবার দেশে ফিরে আসার সুযোগ পায়।

অভ্যুত্থানের পর পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা সংখ্যা ১ হাজার ৪৯০। সারা দেশে অন্তত ১৩৭ জন পুলিশ সদস্য কর্মস্থল ত্যাগ করেন। এর মধ্যে ৫৬ জন ইতিমধ্যে ফিরে এসেছেন, কিন্তু ৮১ জন এখনো পলাতক। পলাতকদের মধ্যে রয়েছেন ৩ জন ডিআইজি, ১০ জন অতিরিক্ত ডিআইজি, ১১ জন পুলিশ সুপার, ৯ জন অতিরিক্ত এসপি, ৫ জন এএসপি, ২৭ জন পরিদর্শক, ৮ জন এসআই, ৩ জন এএসআই এবং ৫ জন কনস্টেবল।

গত ৭ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ৪০ জন ডিআইজি থেকে পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। তাদের অনুকূলে দেওয়া পদকও প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী ‘পলায়ন’ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ইতিমধ্যে অনেক পলাতক কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত এক বছরে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে পুলিশের বিভিন্ন স্তরের ৮৬ জনকে অন্য ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে, ৮২ জনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে এবং ৫৫ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, পলাতক কর্মকর্তাদের শনাক্তকরণ ও দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে অব্যাহত রয়েছে। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি