পৃথিবীকে বাঁচাতে কাজ কম করতে হবে!
প্রকাশিত : ২১:২৮, ২১ জুন ২০২০

সব সময় বলা হয়, পৃথিবীকে বাঁচাতে সম্পদের ভোগ সীমিত করুন। এর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করুন। কিন্তু কখনো কি বলা হয়, কাজ কম করুন? সত্যি বলতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তাহলে কি ভবিষ্যতের পৃথিবী এমনই হবে?
সপ্তাহে মাত্র নয় ঘণ্টা
জার্মান গবেষক ফিলিপ ফ্রে গত বছর প্রস্তাব করেছিলেন, ইউরোপীয়দের সপ্তাহে নয় ঘণ্টার বেশি কাজ করা উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘যত বেশি মানুষ কাজ করবে তত বেশি কার্বন নিঃসরণ হবে।’ যেমন, সপ্তাহান্তে সব সময় কার্বন নিঃসরণ কম হয়। কারণ তখন শিল্প উৎপাদন বন্ধ থাকে বা কম হয়, ফলে কার্বন খরচও কম হয়।
শুধু শিল্প উৎপাদনেই নয়
শুধু যে শিল্প উৎপাদনের কারণে কার্বন খরচ হচ্ছে তা কিন্তু নয়। সাধারণ অফিস আদালত চালাতেও কার্বন খরচ হয়। মানুষের যাতায়াতেও প্রচুর কার্বন খরচ হচ্ছে। এমনকি দেখা গেছে, যখন মানুষ কাজের চাপে থাকেন, তখন ব্যক্তিগত গাড়ি বেশি ব্যবহার করেন।
উৎপাদন কেন বেশি করছি?
সবাই বলে ভোগের পরিমাণ কমাতে। কিন্তু কেউ বলে না উৎপাদন কমাতে৷ এ প্রশ্ন ফ্রে-র। তিনি বলেন, এত উৎপাদন আমরা কেন করছি, যা পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর?
কাজের মূল্য
বিশ্লেষকরা মনে করেন, পৃথিবীর অনেক কাজ আছে যেগুলো না হলেও চলে। আবার অনেক কাজ আছে, যেগুলোর মূল্য নেই। জাতিসংঘের মতে, পৃথিবীর ৪১ ভাগ কাজের কোনো পয়সা দেয়া হয় না।
উৎপাদনকেন্দ্রিক অর্থনীতি
স্প্যানিশ গবেষক মার্গারিটা মেডিয়াভিয়ার মতে, লাভ ও উৎপাদনকেন্দ্রিক অর্থনীতিতে আমরা শুধু পণ্য ও বর্জ্য তৈরি করেই যাচ্ছি। অথচ মানুষ ও পরিবেশের পুষ্টি উপাদানগুলোতে গুরুত্ব দিচ্ছি না। তিনি মনে করেন, এতে ধংস অনিবার্য। কোভিড-১৯ তেমনই এক অতি উৎপাদন ও অতি ভোগের ফল।
সর্বনিম্ন সার্বজনীন আয়
সমস্যা উত্তরনে সম্প্রতি সর্বনিম্ন সার্বজনীন আয়ের বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে। অর্থাৎ একটি জনগোষ্ঠীর কম আয়ের লোকেরা সরকারের কাছ থেকে একটা নির্দিষ্ট অর্থ পাবেন। তখন তারা যদি মনে করেন, কোনো কাজ তার নিজের বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, তবে তিনি তা বাধ্য হয়ে গ্রহণ করবেন না।
সর্বোচ্চ কর্মঘণ্টা
গত বছর ইউরোপীয়দের সপ্তাহে নয় ঘণ্টা কাজ করার আহবান জানালেও ফিলিপ ফ্রে সব হিসেব নিকেষ করে এখন বলছেন, কর্ম ঘণ্টা কমালে হয়তো কার্বন নিঃসরণ অনেক কমে যাবে। কিন্তু বিষয়টা এত সরলভাবে হবে না। তার মতে, উৎপাদন বা কাজের পদ্ধতি সব ঢেলে সাজিয়ে সপ্তাহে ২০ থেকে ২৪ ঘণ্টা কাজ করা যেতে পারে। (ডয়চে ভেলে থেকে সংকলিত)
এমএস/এসি
আরও পড়ুন