ফ্রান্সে পত্রিকার সর্বশেষ হকার আলী আকবরকে সম্মাননা দিচ্ছেন মাখোঁ
প্রকাশিত : ১৪:২০, ১০ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৪:২৮, ১০ আগস্ট ২০২৫

ফ্রান্সে পত্রিকার সর্বশেষ হকার আলী আকবরকে দেশটির অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘অর্ডার অফ মেরিট’-এ ভূষিত করা হচ্ছে। এই সম্মাননা তিনি পাচ্ছেন তার এক পুরনো গ্রাহকের কাছ থেকে, যিনি বর্তমানে দেশটির প্রসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ।
আলী আকবর থাকেন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। শহরটির পুরোনো অধিবাসীদের কাছে তিনি খুব পরিচিত মুখ। আকবর প্রতিদিনের পত্রিকা বগলদাবা করে বেরিয়ে পড়েন। মুখে বলতে থাকেন দৈনিক পত্রিকার তরতাজা শিরোনামগুলো। এভাবেই পত্রিকা পৌঁছে দেন পাঠকের হাতে। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এ কাজ করছেন তিনি।
তবে আকবরের আলাদা বিশেষত্ব আছে। হারিয়ে যেতে বসা পেশা পত্রিকার হকারি প্যারিসে এখন একমাত্র তিনিই ধরে রেখেছেন। অর্থাৎ প্যারিস তথা পুরো ফ্রান্সে পত্রিকার সর্বশেষ হকার তিনি।
ফরাসি সংস্কৃতিতে দীর্ঘদিনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ দেশটির অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় সম্মাননা ‘অর্ডার অব মেরিট’–এর জন্য আলী আকবরকে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন দিয়েছেন। তাকে আগামী মাসে এই সম্মাননা দেওয়া হবে।
পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে জন্ম আলী আকবরের। ষাটের দশকের শেষ ভাগে ইউরোপে পাড়ি জমান। শুরুতে যান নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে। সেখানে তিনি একটি ক্রুজ জাহাজে কাজ পান। পরে ১৯৭২ সালে ফ্রান্সে আসেন। বছরখানেক পর থিতু হন প্যারিসে। পত্রিকার হকারির কাজ নেন।
আলী আকবর বলেন, ‘আমি যখন ১৯৭৩ সালে এ কাজ শুরু করি, তখন প্যারিসে আমাদের মতো ৩৫-৪০ জন হকার ছিল। এখন আমি একা। সবকিছু ডিজিটাল হয়ে গেছে, মানুষ এখন শুধু মোবাইল ফোনই দেখে।’
একটা সময় ছিল যখন তিনি পত্রিকা প্রকাশের প্রথম ঘণ্টাতেই ৮০টির বেশি বিক্রি করতেন। আর এখন প্যারিসের সেইন্ট জার্মেই এলাকার ক্যাফেগুলো ঘুরে বিখ্যাত ফরাসি পত্রিকা লা মঁদের মাত্র ৩০ কপি বিক্রি করতে পারেন।
তিনি জানান, পত্রিকা বিক্রির টাকার অর্ধেক তিনি পান। তবে অবিক্রীত পত্রিকাগুলো ফেরত দেওয়ার সুযোগ নেই।
এত চ্যালেঞ্জের পরও ৭২ বছর বয়সী আলী আকবর তাঁর বর্তমান পেশায় খুশি। তিনি বলেন, ‘এ পেশায় আমি স্বাধীন, খুশি। এ পেশায় কেউ আমাকে আদেশ দেয় না। শুধুমাত্র এই আনন্দের জন্যই আমি কাজটা করে যাই।’
পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে জন্ম আলী আকবর ষাটের দশকের শেষ ভাগে ইউরোপে পাড়ি জমান। শুরুতে যান নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে। সেখানে একটি ক্রুজ জাহাজে (প্রমোদতরি) কাজ পান। ১৯৭২ সালে সেই জাহাজ ফরাসি শহর রুয়েনে নোঙর করে।
এরও বছরখানেক পর আলী আকবর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে চলে আসেন। সেখানেই থিতু হন।
তিনি তার এলাকায় একজন অত্যন্ত পরিচিত ও প্রিয় ব্যক্তিত্ব।
এএইচ
আরও পড়ুন