ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে একমাত্র পুরুষ জিরাফের মৃত্যু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:১৫, ১৮ জানুয়ারি ২০১৯

গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে একমাত্র পুরুষ জিরাফের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে এখানকার জিরাফ পরিবারটি পুরুষ শূন্য হয়ে গেল।

মঙ্গলবার রাতের এই মৃত্যুসহ গত কয়েক মাসে এই পার্কে ছয়টি জিরাফের মৃত্যু হলো। এখন এখানে আর সাতটি জিরাফ রয়েছে, যেগুলোর সবকয়টি মাদি। এতগুলো জিরাফের মৃত্যুর জন্য এখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিজাম উদ্দিনসহ কয়েকজনের অবহেলাকে দায়ী করেছেন পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন কর্মকর্তা তবে নিজাম উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করছেন।

এব্যাপারে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় দুইমাস ধরে ওই জিরাফটি পাতা জাতীয় খাবার খেলেও দানাদার খাবার বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি পার্কের মেডিকেল বোর্ডের সদস্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি বিশেষজ্ঞ রফিকুল আলম, ঢাকা চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটরসহ কয়েকজন চিকিৎসকের নজরে দেওয়া হয়। পরে তারা ওই জিরাফটির জন্য ব্যবস্থাপত্রসহ বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন।

“এই অবস্থায় বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আফ্রিকান সাফারি বেস্টনীতে এই জিরাফটির মৃতদেহ দেখতে পান কর্তব্যরত পার্ক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।” মৃতদেহের নমুনা সংগ্রহ করে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরে মৃতদেহটি পার্ক চত্বরে মাটি চাপা দেওয়া হয়।

পার্কের ভারপ্রাপ্ত পার্ক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, বন্যপ্রাণী সুপারভাইজার আনিসুর রহমান ও সরোয়ার হোসেন খানসহ কয়েকজন কর্মকর্তা পার্কে বন্যপ্রাণীদের প্রতি অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন চিকিৎসক নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

তাদের ভাষ্য, নিজাম উদ্দিন পার্কে রাতযাপন করেন না। তিনি থাকেন পার্ক থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে শেখ কামাল ওয়াইল্ড লাইফ সেন্টারের আবাসিক এলাকায়। তিনি দিনে দু-একবার পার্কে এলেও দিনেই আবার চলে যান। তিনি পার্কের প্রতিষ্ঠাকালীন ভেটেরিনারি সার্জন।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “বন্যপ্রাণীরা যেহেতু কথা বলতে পারে না, তাই তাদের যত্ন নিতে হয় খুব কাছে থেকে; কিন্তু উনি তা করেন না। এ ব্যাপারে পার্কের প্রকল্প পরিচালককেও অবগত করা হয়েছে।

“আমার জানামতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অফ্রিকা থেকে ১০টি জিরাফ এ পার্কে আনা হয়েছিল। তারা এ পার্কে শাবক জন্ম দেয় চারটি। চারটি বাচ্চার মধ্যে একটি বাচ্চা সাব-এডাল্ট অবস্থায় মারা যায়।”

তিনি বলেন, এছাড়াও ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কয়েক মাসের ব্যবধানে মোট ছয়টি এডাল্ট জিরাফ মারা গেছে। এদের মধ্যে কয়েকটি পুরুষ জিরাফও ছিল। গত মঙ্গলবার রাতে সর্বশেষ পুরুষ জিরাফটির মৃত্যুর পর পার্কে বর্তমানে সাতটি জিরাফ রয়েছে, যারা সবাই মাদি। শুধু জিরাফ নয় অবহেলায় অন্য পশু-পাখিও অকালে মারা গেছে বলে তিনি জানান।

পার্কের প্রকল্প পরিচালক সামসুল আজম বলেন, তিনিও পার্কে বিভিন্ন সময় পরিদর্শন করতে গিয়ে নিজাম উদ্দিনকে পাননি; যা পরিদর্শন বুকেও লেখা রয়েছে। অতিসত্বর পার্কে পুরুষ জিরাফ আমদানি করা হবে। তবে আশার কথা হলো পার্কের আরও দু-একটি জিরাফ গর্ভধারণ করেছে। তাদের থেকেও পুরুষ জিরাফ জন্ম নিতে পারে।

এ ব্যাপারে নিজাম উদ্দিন বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি সব সময় পার্কে অবস্থান করে পশু-পাখিকে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দেন। পার্কে তার বিরুদ্ধে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী মিথ্যা অভিযোগ ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন বলে তার দাবি।


টিআর/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি