ঢাকা, রবিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক ১৯ কর্মকর্তার তথ্য তলব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫১, ৫ অক্টোবর ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক ১৯ কর্মকর্তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে দুদক এই তথ্য চায়। ওই চিঠিতে কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, দায়িত্বের পরিধি, কর্মস্থল ও সংশ্লিষ্ট তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তাদের মধ্যে রয়েছেন তিন সাবেক গভর্নর, বেশ কয়েকজন সাবেক ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তাসহ ভারতীয় দুই নাগরিক।

তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা এবং নীতি শিথিলতার আড়ালে ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে তদন্ত চলছে। 

তালিকায় আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। রিজার্ভ চুরির সময় আতিউর রহমান গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন। ওই বছরের ১৫ মার্চ তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন। 

এ ছাড়া সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, এসএম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, আহমেদ জামাল এবং ডেপুটি গভর্নর পদমর্যাদার বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাসের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। সাবেক নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহাও রয়েছেন এ তালিকায়। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজশাহী অফিসের নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক ও আইসিটি বিভাগের দেবদুলাল রায়ের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে মেজবাউল হক গত ১৪ সেপ্টেম্বর এক মাসের নোটিশ দিয়ে পদত্যাগ করেছেন। 

তালিকায় রয়েছেন কমন সার্ভিস বিভাগ-২-এর পরিচালক মো. তফাজ্জল হোসেন, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স কাউন্সিলের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মসিউজ্জামান খান ও রাহাত উদ্দিন। 

চিঠিতে মসিউজ্জামান খানের নাম দুবার উল্লেখ আছে, অপর জায়গায় তার পরিচয় উল্লেখ রয়েছে উপপরিচালক হিসেবে। দুজনই একই ব্যক্তি বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে মাসুম বিল্লাহ ছাড়া অন্য সবাই রিজার্ভ রক্ষণাবেক্ষণসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ছিলেন।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে মোট ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় নেওয়া দুই কোটি ডলার ওই সময়ই ফেরত পায় বাংলাদেশ। আর ফিলিপাইনে নেওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে দেশটির আদালতের নির্দেশে ক্যাসিনো মালিক কিম অং ২০১৬ সালের নভেম্বরে প্রায় দেড় কোটি ডলার ফেরত দেন। বাকি ছয় কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধারে ফিলিপাইনের বিভিন্ন সরকারি সংস্থা বাংলাদেশের পক্ষে ১২টি মামলা করেছে, যা চলমান। 

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষণাবেক্ষণ ও ছাড়ের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের চারটি বিভাগ সম্পৃক্ত রয়েছে। এসব বিভাগ হলো- ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট, আইটি, পেমেন্ট সিস্টেম এবং অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগ।

দুদকের চিঠিতে ভারতীয় নাগরিক নীলা ভান্নান ও রাকেশ আস্তানার বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। নীলা ভান্নান রিজার্ভ চুরির আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে তিনটি ব্যাংকের লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য ‘সুইফট’ সংযোগ দেওয়ার কাজ করেছিলেন। আর রিজার্ভ চুরির পর কীভাবে ‘ফায়ার ওয়াল’ ভেদ করে চুরি হলো সেই তথ্য উদ্ধারের জন্য রাকেশ আস্তানাকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি