বাংলাদেশের লোকসঙ্গীতের অন্যতম ধারা গম্ভীরা
প্রকাশিত : ১২:৩০, ১৮ মার্চ ২০১৭ | আপডেট: ১২:৩০, ১৮ মার্চ ২০১৭
গম্ভীরা বাংলাদেশের লোকসঙ্গীতের অন্যতম একটি ধারা। গম্ভীরা গান প্রায় হাজার বছরের পুরোনো এমন তথ্য মেলে চীনা পরিব্রাজক হিউ এন সাংয়ের বিবরণীতে। প্রাচীন গৌড়ের মালদা, ভোলাহাট, শিবগঞ্জ এর পীঠস্থান। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে গম্ভীরা গানের চর্চা রয়েছে।
গম্ভীরা বর্ণনামূলক গান, গাওয়া হয় দলবদ্ধভাবে। শিবপূজাকে কেন্দ্র করেই এর প্রচলন। শিবের এক নাম 'গম্ভীর'। আর শিবের বন্দনাই হলো গম্ভীরা।
গম্ভীরা সাধারণত দুপ্রকার আদ্যের গম্ভীরা এবং পালা-গম্ভীরা। দেবদেবীকে সম্বোধন করে মানুষ যখন তাঁর সুখ-দুঃখ পরিবেশন করে তখন তাকে তাকে আদ্যের গম্ভীরা আর পালা-গম্ভীরায় গানের পাশাপাশি প্রশ্নোত্তরমূলক কথোপকথনের মাধ্যমে ক্ষমতাবানদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করা হয়।
আগে গম্ভীরা গানে শিব-পার্বতীর প্রেম, দুর্গার স্বামীর ঘর ছেড়ে বাবার বাড়ি আসার উপাখ্যান বণর্না করা হতো। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে গম্ভীরায় নানা নাতির চরিত্র এনে একে সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনের হাতিয়ারে পরিণত করেন শফিউর রহমান সুফি মাস্টার নামে এক ব্যাক্তি। এ অপরাধে তাকে জেলেও দেয় বৃটিশ সরকার। তবে গম্ভীরার সেই প্রতিশ্র“তি আর নেই অক্ষেপ শিল্পীদের। বিচ্যুতি ঘটছে মূল উপস্থাপন রীতি থেকে।
গম্ভীরা গান একতাল, ত্রিতাল, দাদরা, খেমটা ও কাহারবা তালে গাওয়া হয়। গানের সাথে অনুষঙ্গ যন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয় হারমোনিয়াম, ঢোল, তবলা, বাঁশি ও জুঁড়ি। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৬ টি গম্ভীরা দল আছে। শিল্পীরা লড়াই করছেন হাজার বছরের এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে।
আরও পড়ুন