বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে ৪ থেকে ৫ বছর লাগবে: গভর্নর
প্রকাশিত : ১৮:১৭, ১৯ মে ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে অন্তত ৪ থেকে ৫ বছর সময় লাগতে পারে। তিনি বলেন, "চলতি বছরের মধ্যে হয়তো পাচারকারীদের সম্পদ জব্দ করা সম্ভব হবে। মামলা করে অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া শেষ করতে অন্তত ৫ বছর লাগবে।"
তিনি আরও বলেন, "বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ একেবারেই নতুন। এটি দেশের আইনে নয়, বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে করতে হবে। কোন দেশে কোথায় কী আছে, এ তথ্য আগে আনতে হবে। সম্পদ জব্দ করার পর আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।"
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, "দেশ থেকে পাচার হওয়া কয়েকশ কোটি ডলার এ বছরের মধ্যে ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।"
তিনি বলেন, "আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করব। এই জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি সই করব।"
বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ শনাক্ত করতে কাজ শুরু করেছে। ব্রিটেনে তারা কাজ করছে। টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত কয়েকশ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে ল ফার্মকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ফার্মগুলোকে তথ্য দেওয়া হবে। তারা যদি অর্থ আদায় করতে পারে, তার নির্দিষ্ট একটা অংশ তাদের দেওয়া হবে।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, "বিদেশে টাকা পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার চাইতে অর্থ পাচার বন্ধ করা জরুরি। সে জন্য প্রয়োজনে আইন সংস্কার করবে সরকার।"
তিনি আরও বলেন, "দেশের অর্থনীতি সবসময় চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে গেছে। তবে বর্তমানের মতো সব দিক থেকে একবারে এতো চ্যালেঞ্জ কখনো আসেনি। শ্রীলঙ্কায় শুধু বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের (বিওপি) সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। এখানে বিওপি, মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব, দুর্বৃত্তায়নের কারণে ব্যাপক অর্থপাচার হয়েছে।"
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, "আশার বিষয় হলো- বৈদেশিক বাণিজ্যের চলতি হিসাব বড় ধরনের নেতিবাচক থেকে ইতিবাচক হয়েছে। আর্থিক হিসাবের ঘাটতি কমেছে। মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমেছে। আরও কমবে। ট্রেজারি বিল, বন্ডের সুদহার কমতে শুরু করেছে। সাড়ে ১২ শতাংশে উঠা সুদহার এখন সাড়ে ৯ শতাংশে নেমেছে। এর মানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি কাজ করতে শুরু করেছে। পুরোপুরি ফল পেতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে।"
তিনি বলেন, "পরবর্তীতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, এই উদ্যোগ যেন থেমে না যায়।"
আরও পড়ুন