বিলুপ্তির শঙ্কায় দেশিয় উদ্ভিদ ও প্রাণী (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৬:২৬, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রুট হওয়ায় বাংলাদেশে বহু আগে থেকেই বিদেশী বণিকদের যাতায়াত। বিভিন্ন সময় নানা উদ্ভিদ ও প্রাণী নিজেদের সাথে করে এনেছেন তারা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কচুরিপানা, ইউক্যালিপটাস, আকাশমণি, আসাম লতা, স্বর্ণলতা, লান্টানা বা লন্ঠন ও বন মটমটিয়ার। যার অনেকগুলোই ধারণ করেছে দেশিয় নাম।
বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও জার্মানির পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশে দেশি প্রজাতির জন্য ক্ষতিকর ৬৯ প্রজাতির বিদেশী আগ্রাসী উদ্ভিদ ও প্রাণী আছে। এর মধ্যে আবার ৫১ শতাংশই মারাত্মক আগ্রাসী। ক্ষতিকর এসব উদ্ভিদ ও প্রাণীর কারণে দেশি প্রজাতি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশি প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীরও পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা দরকার।
গবেষণায় আরও বলা হয়, বিদেশি এসব উদ্ভিদের কিছু বাঁচে যত্নে। অনেকগুলোর আবার যত্ন লাগে না। যেখানে জন্মে সেখানকার স্থানীয় উদ্ভিদের জন্য হুমকি হয়ে ওঠে।
জানতে চাইলে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্নিটি অব সানশাইন কোস্টের সিনিয়র গবেষক ড. শরিফ আহমেদ মুকুল বলেন, ‘ইউক্যালিপটাস, আকাশি এগুলো দেশে ও বিদেশে উভয়েতেই গাছপালার জন্য ক্ষতিকর। এসব উদ্ভিদ দেশিয় গাছের সাথে প্রতিযোগিতা করে মাটি থেকে অধিক নিউট্রিশন ও পানি শোষণ করছে। এছাড়া দেশিয় প্রজাতির গাছগুলোর বেড়ে ওঠার প্রধান বাধা হচ্ছে এই বিদেশী উদ্ভিদ।’
শুধু গাছ নয় এসেছে আগ্রাসী প্রজাতির মাছও। তিনি বলেন, ‘দ্রুত বর্ধনশীল মাছ আমাদের স্থানীয় ছোট প্রজাতির মাছগুলো খেয়ে বড় হচ্ছে। এতে করে হারিয়ে যাচ্ছে দেশিয় প্রজাতি।’
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ‘পুরো তালিকাটাই আমাদের করা দরকার। তাহলে আমরা বুঝতে পারব কোনটা দেশি আর কোনটা বিদেশী। এখন আমাদেরটা চিহ্নিত করার আগে যদি বিদেশীটা করি তাহলে আমাদের নিজেরটাই হয়তো বিদেশী তালিকায় চলে যাবে।’
এমন গবেষণা দেশি প্রজাতি সংরক্ষণে ভূমিকা রাখবে। তাই এ ধরনের গবেষণা আরও হওয়া দরকার বলেও মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ।
এআই/এমবি
আরও পড়ুন