ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৮ মে ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, ঢাকার শেয়ারবাজারে বড় পতন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৩০, ৭ মে ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ভারত ও পাকিস্তান কেউই যেন কাউকে দেখতে পারে না। তাদের সম্পর্কটা এরকমই সাপে-নেউলে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা দু’দেশের চিরবৈরী মনোভাবকে আরও উসকে দিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বর্তমানে দেশ দুটির মধ্যে দেখা দিয়েছে সামরিক উত্তেজনা। আর সেই উত্তেজনার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় ঘটেছে বড় ধরনের দরপতন।

বুধবার (৭ মে) দুপুর ১টায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে দরপতন হয় ৩৭৭টির। এর মধ্যে দর বাড়ে কেবল ৯টির এবং আগের দরে লেনদেন হয় ৭টির। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১১৬ পয়েন্ট। আর এই সময়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

অন্যদিকে দুপুর ১টা ৭ মিনিটে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২২৪ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ৭৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬ টির, কমেছে ১৫২ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬ টির।

জানা গেছে, ভারত ও পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনার মধ্যে আজ বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। ফলে লেনদেনের শুরুতেই হয় বড় ধরনের দরপতন।

শেয়ারবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এই উপমহাদেশে আতঙ্ক ছড়াবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আগে থেকেই পতনের ধারায় থাকা দেশের শেয়ারবাজার এখন তলানিতে রয়েছে। এখান থেকে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন না হওয়াটাই অস্বাভাবিক। সুতরাং বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হয়ে স্বাভাবিক আচরণ করা উচিত। তাহলে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি ও ডিএসইর পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতির কারণে শেয়ারবাজারে এমন দরপতন দেখা দিয়েছে।

আমাদের শেয়ারবাজার এমনিতেই এখন বটম লাইনে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এখান থেকে বাজার খুব নিচে নামার সম্ভাবনা কম। আশা করছি, বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

দীর্ঘদিন ধরেই দেশের শেয়ারবাজার পতনের মধ্যে রয়েছে জানিয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, বিনিয়োগকারীদের এখন দিশেহারা অবস্থা। এর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের ভেতর সৃষ্ট বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা গণমাধ্যমে এসেছে। দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট এই পরিস্থিতির কারণে সবার মধ্যে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। আতঙ্কে অনেক বিনিয়োগকারী কম দামে শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করছেন। এ কারণেই লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন দেখা দিয়েছে।

বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে শেয়ার বিক্রির চাপ না বাড়ালে বাজার অচিরেই ঘুরে দাঁড়াবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন। যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। হামলার পর দিল্লি সোজাসুজি এর দায় চাপায় ইসলামাবাদের ঘাড়ে। দুই দেশ থেকে নেওয়া হয় বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপও।

পরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি থামাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেয় ইরান ও রাশিয়া। তবে সবকিছু উপেক্ষা করে জম্মু-কাশ্মীরে হামলার দুই সপ্তাহ পর মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত।

এদিকে পাকিস্তানের দাবি, ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে তারাও কাশ্মীরের ভিম্বর গলি অঞ্চলে গোলা নিক্ষেপ করেছে।


এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি