ঢাকা, বুধবার   ১৬ জুলাই ২০২৫

ভারতে চিকিৎসা নেয়া বিদেশীদের ৪৫ শতাংশ বাংলাদেশী

প্রকাশিত : ১৭:৫৮, ১১ জুলাই ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতে যাওয়া মোট বিদেশী রোগীর ৪৫ শতাংশ বাংলাদেশী। আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াংয়ের (ইওয়াই) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতে চিকিৎসা নেয়া বাংলাদেশীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। মাত্র এক বছর আগেও দেশটিতে চিকিৎসা নেয়া বিদেশীদের মধ্যে বাংলাদেশীর সংখ্যা ছিল ৩৫ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশীদের জন্য সহজ করা হয়েছে ভিসা প্রাপ্তি। এ কারণে চিকিৎসা ভিসায় (মেডিকেল ট্যুরিজম) বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার হার প্রতি বছরই বাড়ছে।

মেডিকেল ট্যুরিজমের বাজার সম্ভাবনা নিয়ে ভারতে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে ইওয়াই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশ, ইরাক ও ওমান থেকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সর্বশেষ ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে ২ লাখ ২১ হাজার ৭৫১ রোগী চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতে গেছেন। দেশটিতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশীর সংখ্যা ২০১৪ সালের পর উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০১৪ সালে ভারতে যাওয়া বাংলাদেশীর সংখ্যা ছিল ৬০ হাজার ২৯২। পরের বছর এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ২০ হাজার ৩৮৮। ২০১৬ সালে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতে যেতে মেডিকেল ভিসা নিয়েছেন ২ লাখ ১০ হাজার ১৪২ বাংলাদেশী।

কী ধরনের রোগের চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশী রোগীরা ভারত যাচ্ছেন, সে পরিসংখ্যানও প্রতিবেদনে তুলে এনেছে ইওয়াই। তাতে দেখা গেছে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া রোগীদের ৬২ শতাংশই অসংক্রামক নানা ব্যাধির (এনসিডি) চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতের মেডিকেল ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়েছেন। সংক্রামক, মাতৃত্ব, নবজাতক ও পুষ্টির অভাবজনিত বিভিন্ন রোগের (সিএমএনএনডি) চিকিৎসা নিতে ভারতে গিয়েছেন ২৯ শতাংশ রোগী। আঘাতের চিকিৎসায় ভারতে যাওয়া রোগী ৮ শতাংশ। বাকিরা অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় দেশটিতে যান।

কোন ধরনের রোগের চিকিৎসায় ভারত গমনকারী বাংলাদেশী রোগী বৃদ্ধির হার কেমন সে তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, আঘাতের চিকিৎসায় রোগী বেড়েছে প্রতি বছর যৌগিক হারে (সিএজিআর ) ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া হূদরোগে ৩ দশমিক ৬, টিউমারের চিকিৎসায় ৩ দশমিক ২, ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগে ২ দশমিক ৯, পাকস্থলীর রোগে ২ দশমিক ৭, শ্বাসকষ্টে ২ দশমিক ৪, ব্যথার চিকিৎসায় ২, এইচআইভি ও এইডসের চিকিৎসায় ১ দশমিক ৬, স্নায়ুরোগের চিকিৎসায় প্রতি বছর ১ দশমিক ৫ শতাংশ হারে রোগী বেড়েছে। ইন্দ্রিয়, ত্বক, যক্ষ্মা ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা নিতে ১ দশমিক ১ শতাংশ এবং মাতৃত্ব ও নবজাতকের নানা রোগের চিকিৎসায় ভারতে যাওয়া রোগী বেড়েছে বার্ষিক যৌগিক হার শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ ।

বিভিন্ন গবেষণার তথ্য বলছে, প্রতি বছর শুধু চিকিৎসার জন্যই দেশের বাইরে পা রাখছেন তিন লাখের বেশি বাংলাদেশী। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিদেশে পাড়ি দেয়া উচ্চবিত্তরা যাচ্ছেন মূলত সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায়। হূদরোগ, ক্যান্সার, চোখ, দাঁত, কিডনি প্রতিস্থাপন ও কসমেটিক সার্জারির জন্য এসব দেশে যাচ্ছেন তারা। আর মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্তের গন্তব্য ভারত।

দেশে রোগী-চিকিৎসকের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে নানা কারণে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন চিকিৎসকের লক্ষ্য হওয়া উচিত রোগীর সন্তুষ্টি অর্জন। শুধু রোগমুক্তি নয়, চিকিৎসকের আচার-ব্যবহার-নৈতিকতাও এর সঙ্গে জড়িত। পাশাপাশি চিকিৎসকের দক্ষতাও গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রচারণা ও বিপণন কৌশলও ভূমিকা রাখছে।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি