ঢাকা, সোমবার   ২০ মে ২০২৪

‘মাঝে মাঝে মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জাদুর কাঠি আছে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:১৮, ২ নভেম্বর ২০১৭

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেছেন, মাননীয় আদালত আমার মাঝে মাঝে মনে হয় শেখ হাসিনার কাছে জাদুর কাঠি আছে। সেই কাঠির ছোঁয়ায় তার বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি, অনিয়ম ও চাঁদাবাজিসহ সব মামলা খারিজ হয়ে গেছে। আমাদের কাছে তেমন কোনো জাদুর কাঠি নেই। তাই একই সময়ে আমাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো একের পর এক সচল হয়েছে। হচ্ছে নতুন নতুন মামলা।

মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য তৃতীয়বারের মত দিতে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে উপস্থিত হন খালেদা জিয়া। ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে তিনি এ বক্তব্য দেন।

বিএনপির চেয়ারপাসন বলেন,ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতারা হুমকি দিচ্ছেন, আমাকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিদায় করে দেওয়া হবে। অসৎ উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরাতে আমাকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার নীলনকশা প্রণয়ন করছে ক্ষমতাসীনরা।

খালেদা জিয়া বলেন, মাননীয় আদালত, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের অনেক সদস্য এবং শাসক দলের অনেক নেতা আমাকে দোষী সাব্যস্ত করে বক্তব্য দিয়েছেন। আমাকে অভিযুক্ত করে বিরূপ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা এসব মামলার রায় কী হবে, তা আগাম জানেন।

অনেকে তাঁদের বক্তব্যে মামলায় আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। আমাকে রাজনীতি থেকে বিদায় করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। সে বিষয়ে এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের উচ্চ মহলে তৎপরতায় বক্তব্য ও বিবৃতি থেকে এসব স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন আরও বলেন, আজ সেসব কারণে দেশবাসীর কাছে গুরুতর সন্দেহ রয়েছে, আমার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর ন্যায়বিচার হবে কি-না। 

এর আগে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবীরা তাঁর জামিন স্থায়ী করে দেওয়ার আবেদন জানান। তাঁরা বলেন, খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির নেত্রী। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ, তার বয়স হয়েছে। এই বিবেচনায় তিনি স্থায়ী জামিন পেতে পারেন।

তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। দুদকের আইনজীবী বলেন, খালেদা জিয়া জামিনের অপব্যবহার করেছেন। কাজেই তাঁকে স্থায়ী জামিন দেওয়া উচিত নয়।

শুনানি শেষে আদালত বলেন, জামিন স্থায়ী হবে না। পরবর্তী শুনানির জন্য ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন বিচারক।

এ ছাড়া খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এই আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে তা পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টে করা আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম মুলতবি রাখার আবেদন করেন। আদালত তা নাকচ করে দিয়েছেন।

গত ১৯ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। ওই দিন বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান খালেদা জিয়া। পরে আদালত জামিন আবেদনের শুনানি শেষে এক লাখ টাকা মুচলেকায় তাঁর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালত জানান, অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে পারবেন খালেদা জিয়া।

ওই দিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে এক ঘণ্টা বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। তাঁর বক্তব্য শেষ না হওয়ায় পরবর্তী বক্তব্যের জন্য ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। ওই দিনও তাঁর বক্তব্য শেষ না হওয়ায় আজকের দিন ধার্য করা হয়।

এর আগে গত ১২ অক্টোবর আদালতে হাজির না হওয়ায় অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন বিশেষ জজ আদালত।

আরকে//এআর


Ekushey Television Ltd.





© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি