ঢাকা, শুক্রবার   ১৮ জুলাই ২০২৫

মাদকের ভয়াবহতা বাড়ছে

প্রকাশিত : ১৫:১৮, ৪ জুন ২০১৯ | আপডেট: ১৯:২৭, ৪ জুন ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

মাদক একটি রাষ্ট্রীয় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে সরকার ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে ইতোমধ্যে। মাদক নির্মুলের জন্য সরকার কঠোর অবস্থান নেওয়ার জন্য মাদকের গডফাদারদের ক্রসফায়ার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ক্রসফায়ার দেওয়ার পরও থামছে না মাদকসন্ত্রাস। আর এই মাদকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উপায় খুঁজছেন বিশিষ্টজনরা। বিশিষ্টজনদের মতে, মাদক নির্মুলের জন্য সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

মাদক প্রতিরোধের জন্য বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। তবে, মাদকের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইয়াবা। আর ইয়াবা সমাজে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ছে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে। যুব সমাজ মাদকের থাবায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সরকার মাদক নির্মুলে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে আর এই পদক্ষেপকে বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করছে  বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, কাস্টমস, দুদক। ইয়াবা ব্যবসা করে যারা রাতারাতি দিনমজুর থেকে কোটিপতি বনে গেছেন তারা এখন বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান ও ক্রসফায়ারের ঘটনায় এখন গা-ঢাকা দিয়েছে ইয়াবা ডনরা। অনেকে তাদের সম্পদ বাঁচাতে আত্মসমর্পণ করেছে। তবে তাদের কোনো সম্পদই রক্ষা পাচ্ছে না প্রশাসনের হাত থেকে। আদালতের নির্দেশে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়িঘর সম্পদ ক্রোক (জব্দ) করা শুরু করেছে পুলিশ। অপর দিকে মাদককারবারীদের গ্রেফতারে দেশের প্রতিটি থানায় পুলিশ সদর দফতর থেকে বিশেষ অভিযানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দুদক প্রায় ৩০০ কারবারীর অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে। প্রশাসনের সব পর্যায় থেকে মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ইয়াবাসহ সব মাদক কারবারীরা।

পুলিশ সূত্র জানা গেছে, আদালতের নির্দেশে টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়িঘর সম্পদ ক্রোক (জব্দ) করা শুরু করেছে পুলিশ। শনিবার টেকনাফের নাজিরপাড়ার এজাহার মিয়া এবং তার দুই ছেলে নুরুল হক ভুট্টো (৩২) ও নূর মোহাম্মদ ওরফে মংগ্রীর (৩৫) দুটি বাড়ি, জমি ও ভেতরকার মালামাল ক্রোক করা হয়েছে। ক্রোককৃত সম্পদের দাম ৪০ কোটি টাকার বেশি হবে।

এদিকে জানা গেছে, শুধু টেকনাফের কারবারীদেরই সম্পদ ক্রোক করা হচ্ছে না। তালিকা ধরে দেশের সব মাদক ব্যবসায়ীর সম্পদ ক্রোক করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফরতরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে সুপারিশ পাঠাবে পুলিশ। এছাড়া তাদের গ্রেফতার করতে থানাগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্র মতে গত এক বছরে সারা দেশে শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে মারা গেছে। গত বৃহস্পতিবার ইয়াবা গডফাদার সাইফুল ইসলাম ওরফে হাজী সাইফুল করিম বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর মাদক কারবারীদের আতঙ্ক আরো বেড়েছে। এদিকে সীমান্তগুলোতে আরো নজরদারী বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

এদিকে আরও জানা গেছে, সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত টেকনাফের ১০২ জন ইয়াবা কারবারীর মধ্যে ৭৪ জনের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ৭৪ জনসহ মোট ৩শ মাদক কারবারীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামল দুদক। এ বিষয়ে দুদকের উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছ থেকে নেওয়া তালিকাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত মাদক কারবারীদের একটি তালিকা করেছে দুদক।

এতো কিছুর পরও মাদক বন্ধ হচ্ছে। এই মাদক প্রেতিরোধের জন্য সামাজিক আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এখানে বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন। তারা তাদের শিক্ষার্থীদের মাদকের কুফল সম্পর্কে তুলে ধরতে পারেন। মাদকের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে শিক্ষার্থীদেরকে সচেতন করতে পারেন। তাহলে হয়তো মাদক অনেকাংশে কমে যেতে পারে।

এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। মাদকের বিরুদ্ধে আরও অভিযান জোরদার করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে তারা মাদকের কারবারিদের সহায়তা করে থাকেন। এ ধরনের অভিযোগ যাতে না উঠে সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরও সতর্ক হতে হবে এবং যাতে তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ না উঠে সেজন্য তাদের আরও সৎ হতে হবে বলেই অনেকেই মনে করে।

দুদককে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে আরও বেশি বেশি করে অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি