ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মিয়ানমারে রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের যে কারণে জেল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:০৬, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মিয়ানমারে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা অনুসন্ধানের সময় রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লংঘনের দায়ে তাদের এ শাস্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছে আদালত। সাজাপ্রাপ্ত দুই সাংবাদিক হলেন- ওয়া লোন এবং কিয়াও সো উ।

পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছিল যখন তাদের হাতে অফিসিয়াল ডকুমেন্ট ছিল এবং সেগুলো গ্রেফতারের আগ মূহুর্তেই পুলিশ তাদের হাতে দিয়েছিল বলে তারা অভিযোগ করেন। ওই সাংবাদিকরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। আর দুই সাংবাদিকই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বলেছেন পুরো বিষয়টিই পুলিশের সাজানো ছিল। মিয়ানমারের এই ঘটনাকে মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

রায়ের পর ওয়া লোন বলেন, আমি ভীত নই। আমি কোন অন্যায় করিনি। আমি ন্যায় বিচার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। কারাদণ্ড পাওয়া দুই সাংবাদিকই গত বছর ডিসেম্বর থেকে আটক রয়েছেন। বিচারক ইয়ে লুইন বলেছেন, এই দুজন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই রাষ্ট্রীয় স্বার্থের ক্ষতি করেছেন।

বিবিসি সংবাদদাতা নিক বিয়াকে ইয়াঙ্গুন থেকে জানিয়েছেন অনেকের কাছে এ রায় মুক্ত গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রের জন্য আরেকটি ধাক্কা বলে বিবেচিত হচ্ছে।

রয়টার্সের প্রধান সম্পাদক স্টিফেন জে এডলার বলেছেন, যখন ওয়া লোন ও কিয়াও সো উ আটক হলো তখন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাদের নিরাপত্তা। পরে আইনি পরিস্থিতি বুঝতে পেরে দুই সাংবাদিক ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে ইনদিন গ্রামে যা ঘটেছে তা প্রকাশ ছিল আমাদের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, আমরা অনুসন্ধানী রিপোর্টটি প্রকাশ করেছিলাম কারণ এটি নিয়ে বিশ্বব্যাপী আগ্রহ ছিল।

বিবিসি স্বাধীনভাবে ওই রিপোর্ট যাচাই করে দেখতে পারেনি কারণ রাখাইনে সাংবাদিকদের কাজ করার সুযোগ খুবই সীমিত। কিন্তু রয়টার্সের ওই রিপোর্টটি প্রকাশের আগে থেকেই এভাবে গণহত্যার খবর পাওয়া যাচ্ছিল।

রাখাইন মূলত নতুন করে আলোচনায় আসে গত বছর আগস্টের আগে থেকেই, যখন সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ মানুষ রাখাইন ছাড়তে বাধ্য হয়।

পরে রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে আটক করা হয় ১২ ডিসেম্বর।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে যা ছিল-
উত্তর রাখাইনের ইনদিন গ্রামে সেনাবাহিনী ও কিছু গ্রামবাসী মিলে সারিবদ্ধভাবে একদল রোহিঙ্গাকে বসিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর। এ ঘটনাই উঠে এসেছিল রয়টার্সের প্রতিবেদনে- যার তথ্য-উপাত্ত সব ওই দুই সাংবাদিকই যোগাড় করেছিলেন।

তারা গ্রামবাসী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনার ছবি যোগাড় করেন। ওই গ্রামের বৌদ্ধদের একটি কবর খননের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এরপর ওই ১০ জনকে হত্যা করা হয় যার মধ্যে অন্তত দুজনকে বৌদ্ধ গ্রামবাসীরা ও বাকিদের সেনা সদস্যরা গুলি করে হত্যা করে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি।

এসএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি