ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

শান্তিরক্ষায় বহু বাংলাদেশিকে প্রাণ দিতে হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৯, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার‌্যক্রমে বাংলাদেশিদের অবদান স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শান্তি রক্ষা কার‌্যক্রমে অংশ নিয়ে আমাদের বহু সেনাকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। শান্তিরক্ষায় যেসব দেশ কাজ করছে তাঁদের কথা ও উদ্বেগের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে জাতিসংঘকে আহবান জানিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিরক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের অনেক শান্তিরক্ষীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তবু দায়িত্ব পালনে আমরা কখনও পিছ পা হইনি। এখন আমরা সম্ভব স্বল্পতম সময়ে আমাদের শান্তিরক্ষী মোতায়েন করতে পারি । যে কোনো চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির দ্রুত মোকাবেলা করার মত প্রশিক্ষণ তাদের দেওয়া হয়। যেখানে তারা যায়, মানুষের হৃদয় ও মন জয় করতেই তারা কাজ করে।

বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, নিজেদের নিরাপদ রাখার সক্ষমতা শান্তিরক্ষীদের থাকতে হবে। প্রয়োজনে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার কাজটি তাদের করতে হবে।

এ বিষয়টি মাথায় রেখে মালিতে শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষায় মাইন প্রতিরোধক যানবাহন সরবরাহ করার কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। ব্যক্তিগত আগ্রহে শান্তিরক্ষা মিশনে নারী সদস্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করার কথাও তিনি বলেন।

কঙ্গোতে শান্তিরক্ষী পাঠানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কঙ্গোতে প্রথম নারী হেলিকপ্টার পাইলট পাঠিয়েছি। এটি আমাদের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

শান্তি মিশনে যৌন হয়রানীর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’নীতির কথাও বৈঠকে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

 

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাজেট ও লোকবল কমানো হলে তা বিরোধপূর্ণ এলাকাগুলোয় শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে বিশ্বনেতাদের সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে খরচ এবং কর্মী কমালে তা শান্তি মিশনের কাজে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। শান্তিরক্ষায় সামনের সারিতে যারা কাজ করছে; তাদের উদ্বেগের বিষয়টি আবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে শুনতে হবে।

প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার জাতিসংঘ ও শান্তি মিশনের জন্য বরাদ্দ কমিয়ে আনার পথে হাঁটছে। গতবছর যুক্তরাষ্ট্র শান্তিরক্ষা মিশনের মোট বাজেটের ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ দিতে রাজি হলেও ডিসেম্বরে তা ২৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার কমানোর ঘোষণা দেয়।

উল্লেখ্য,জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ রয়েছে সামনের কাতারে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৭ হাজার ৬৭ জন জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিচ্ছেন, যার মধ্যে রয়েছেন ১৬৬ জন নারী।

ইথিওপিয়া ও রুয়ান্ডার পর বাংলাদেশ থেকেই সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী এখন বিভিন্ন মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দেড়শ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালনের সময় নিহত হয়েছেন।

সংঘাতপ্রবণ এলাকার মানুষের জানমাল রক্ষার পাশাপাশি শান্তি ফিরিয়ে আনতে ভূমিকার জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ভূমিকা বরাবর প্রশংসা পেয়ে এলেও বাজেট স্বল্পতার কারণে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা ও তাদের কর্মক্ষমতায় অনেক ক্ষেত্রে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।   

/ এআর /


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি