ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

সুনামগঞ্জে মাথা মোটা রোগে আক্রান্ত

শিশুকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

মোঃ আব্দুস সালাম,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৭:৫০, ১৭ অক্টোবর ২০১৯

হাওরের জনপদ সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের শ্যামরচর গ্রামে হতদরিদ্র পিতামাতার ১৩ বছরের একটি নিষ্পাপ শিশু সন্তান মাথা মোটা রোগে আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে না পারায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তার নাম উৎস দে(১৩)। 

সে উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের শ্যামারচর গ্রামের কর্মকার পাড়া গ্রামের সাধারন একজন স্বর্ণ কারিগর অরুণ দের ছেলে । অরুণ দে  ও অর্পণা রানী দে’র এক ছেলে ও দুই মেয়ের সংসারে সবার বড় ছেলে উৎস দে তার জন্মের পর থেকে নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার অভাবে এখন মৃত্যুর পথযাত্রী। শিশুটি বয়স বর্তমানে ১৩ বছর হলেও অস্বাভাবিক মাথা মোটা রোগে আক্রান্তের কারণে তাকে দেখলে মনে হবে সে ৫/৬ বছরের একটি শিশু। ২০০৩ সালে যখন তার বয়স তিনবছর তখন কোমড়ের পাশে একটি টিউমার দেখা দেয়। তখনই অরুণ দে তার একমাত্র ছেলেটিকে সুস্থ করে তুলতে সহায় সম্বল বিক্রি করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তারের পরামর্শে তার টিউমার অপারেশন করানো হয়। 

এরপর থেকেই ঐ শিশুরটি মাথা মোটা হতে থাকে। চারটি শিশুর মাথার  চেয়েও অনেক বড় এই শিশুটির মাথা। ২০১৬ সালে এই অভাব অনটনের সংসারে অরুণ দে’র একমাত্র শেষ সম্বল ৪ শতক বসতভিটার জায়গাটুকু ও বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে নিয়ে যান। তখন ডাক্তাররা শিশুটির পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ধরা পড়ে তার কোমড়ের অপরেশনটা ভূল ছিল বলেই ছেলেটির মাথায় পানি জমে মাথাটি মোটা হওয়া শুরু করেছে । উন্নত চিকিৎসার মাধ্যেমে তাকে বাচাঁতে হলে ভারতের মাদ্রাজে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা খোলা নেই। কিন্তু ভারতে এই শিশুটির চিকিৎসা করাতে হলে প্রায় ১৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্ত গত প্রায় তিন বছরে অর্থের সংকটের  কারণে ও ছেলেটির চিকিৎসা করানো ও সম্ভব হয়ে উঠেনি । অরুণের  পাঁচজন সদস্যর এই পরিবারের মাথা গোজার স্থানটুকু বিক্রি করে দেয়ায় অন্যর বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে নিজ ঘরে বসেই স্বর্ণের জোড়াাতলির কাজ করে দিনে কিছু টাকা রোজগার করতে পারলে পেঠে ভাত জুটে অন্যতায় তাদেরকে  অনাহারে অর্ধহারে জীবনযাপন করতে হয়।  

ফলে একমাত্র ছেলে সন্তানটির চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে না পারায় এবং সমাজে এত বিত্তবানরা থাকার পরেও কাউকে পাশে না পেয়ে হতাশ শিশুটির পরিবার । দিনযতই যাচ্ছে শিশুটির মাথা বড় হতে যাওয়ায় তার বেচেঁ থাকা নিয়ে শংঙ্কায় তার পিতামাতা ও আত্মীয় স্বজনরা। সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা ফেলে তাদের একমাত্র ছেলে সন্তানটি বেচেঁ যাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমন প্রত্যাশার কথাই জানান অরুণ দে ও তার স্ত্রী অর্পণা রানী দে। 

এ ব্যাপারে শ্যামারচর এলাকার সমাজসেবী মোঃ আজিজুল হক,৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রুপক চৌধুরী ও স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ডাঃ পীজুষ চৌধুরী জানান,বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত উৎস’র দের পিতা অরুণ দে একজন হতদরিদ্র দিনমুজুর। তিার সন্তানের চিকিৎসার ব্যয় মিটাতে গিয়ে নিজের বসতভিটাও বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে এখন পথে বসেছেন। যে ঘরে উনি থাকেন সেই ঘরেই স্বর্ণের ভাঙ্গা গড়ার কাজ করে যৎসামান্য টাকা রোজগার করতে পারেন ,তখনই কেবল পাচঁ সদস্যর পরিবারের খাবার জুটে। রোজগার না হলে প্রায় সময় সন্তানদের নিয়ে অনাহারে অর্ধাঞারে দিনাতিপাত করেন। কাজেই এমন অবস্থায় তার সন্তানটি এখন মৃত্যুর পথযাত্রী বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি এই শিশুটির চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতেন তাহলে হয়তো শিশুটি বেচেঁ যেত।

এ ব্যাপারে চরনারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রতন কুমার দাস তালুকদার বলেন,এই উৎস দের কোমড়ে অপারেশনের পর থেকে মাথায় পানি জমে দিন দিন মাথা অস্বাভাবিকবাবে মোটা হতে থাকে। ইতিমধ্যে তার পিতা অরুণ দে ছেলের চিকিৎসা করতে সিলেট এবং ঢাকায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছেন। তিনি আরো বলেন আমরা ইউনিয়নবাসী যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি শিশুটির চিকিৎসা সেবা প্রদানের মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তুলতে। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের মাদ্রাজে যেতে হবে। এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। কাজেই এত টাকা তো অরুণ দের পক্ষে জোগান দেয়া কোনভাবেই সম্ভব না। যার নুন আনতে পানতা পুড়ায়। তাই সরকারের উচ্চ মহলের সুদৃষ্টি পেলে শিশুটি নতুন জীবন পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  

এ ব্যপারে  সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ আশুতোষ দাস বলেন, সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ আশুতোষ দাস জানান,এটা জন্মগত ত্রুটির কারণে এই অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন মস্তিস্কের ভেতরে যে ব্রেইনটি থাকে সেটি ক্লোজের উপর ভাসমান থাকে যেটাকে সি এস এফ বলা হয়। যখনই এই সি এস এফ রেগুলেশনের মধ্যে ক্রুটি থাকে তখন সি এস এঢ এর রেগুলেশনে যথাযথভাবে ক্রুটি থাকে একুয়ার্ড হতে পারে জন্মগত ও হতে পারে। ফলে এ কারণেই মাথায় পাি জমে মাথাটা বড় হতে থাকে আর ব্রেইনটা ছোট হতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত এই শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন হয়ে যায়। তিনি ঢাকা নিরোসাইস ইনস্টিটিউটে গিয়ে বিশেষঞ্জ ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করার পরামর্শ দেন।

সমাজের বিত্তবানদের পাশাপাশি সরকার প্রধান শেখ হাসিনা এই শিশুটিকে সুস্থ করে তুলতে তার পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিবেন এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর। 

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি