অপশনাল প্রটোকল-৩
শিশুর প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য অনুস্বাক্ষর জরুরি
প্রকাশিত : ১২:৪৫, ৭ অক্টোবর ২০১৮

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কোনও শিশু দেশে বিচার না পেলে জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটিতে অভিযোগ করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট বিধানে এখনও অনুস্বাক্ষর করেনি। ফলে এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের শিশুরা। তিনি বলেন, অনেক দেশ এতে অনুস্বাক্ষর করেছে। এটি নিয়ে কমিশন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে এবং অনুস্বাক্ষর করবে বলে নীতিগত সম্মতি জ্ঞাপন করছে।
রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কনফারেন্স রুমে অপশনাল প্রটৌকল-৩ অনুসন্ধান এবং করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
রিয়াজুল হক বলেন, তবে আমরা নিজেরা যদি শিশুদের ন্যায়বিচার ও তাদের অধিকার সঠিকভাবে নিশ্চিত করতে পারি তাহলে তাদের আন্তর্জাতিক মহলে যাওয়া লাগবে না। তাই শিশুদের ও অধিকার ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, কোনও রাষ্ট্র শিশুদের উপর অন্যায় অবিচার করে না। ব্যক্তি করে। সে ক্ষেত্র আমরা যদি সেই ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনতে পারি, তাহলে এমন অনুস্বাক্ষরের প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।
তিনি আরও বলেন, সরকার অনুস্বাক্ষর করবে আশা করি। কারণ শিশু অধিকার সনদের অপশনাল প্রটোকল-১ ও ২-এ অনুস্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আবদুশ শহীদ মাহমুদ বলেন, অপশনাল প্রটোকল-৩ বা ঐচ্ছিক চুক্তি-৩ হলো জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের একটি বিশেষ বিধান। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শিশুরা তাদের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রতিকার না পেলে এর আওতায় জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটিতে অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।
বাংলাদেশ ইতিমধ্যে নারীর প্রতি বৈষম্য রোধ-সংক্রান্ত সনদের আওতায় এ ধরনের ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট হয়েছে। অর্থাৎ এ ধরনের ব্যবস্থা বাংলাদেশের জন্য নতুন নয়। তিনি জানান, অপশনাল প্রটোকল-৩, ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল কার্যকর হয়েছে। ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৫টি দেশ অনুস্বাক্ষর এবং ৫০টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশ এখনও অনুস্বাক্ষর করেনি।
আবদুশ শহীদ মাহমুদ বলেন, অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে এমন শিশু, শিশুদল বা তাদের প্রতিনিধি অনুস্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রের বিপক্ষে জাতিসংঘ শিশু অধিকার কমিটির কাছে অভিযোগ জানাতে পারবে। তবে অভিযোগ দায়ের করতে হলে অবশ্যই শিশু বা শিশুদের সম্মতি লাগবে। অভিযোগ দায়েরের কিছু শর্ত আছে। আবেদনকারী শিশুকে অবশ্যই প্রথমে তার দেশের বিচারব্যবস্থার আওতায় প্রতিকার পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সেখানে ব্যর্থ হলে জাতিসংঘের কমিটিতে অভিযোগ করতে পারবে। দেশের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর এক বছরের মধ্যে অভিযোগ করতে হবে। অভিযোগ লিখিত হতে হবে। এক অভিযোগ দুইবার করা যাবে না। অন্য কোনো আন্তর্জাতিক বা জাতীয় সংস্থায় অভিযোগ অনিষ্পন্ন থাকলে জাতিসংঘে অভিযোগ করা যাবে না।
টিআর/একে/
আরও পড়ুন