ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তিন কাহিনীচিত্র

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৮, ১৫ আগস্ট ২০২০

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করবে। এর মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু নাটক। যদিও বেশির ভাগ নাটকই পুরনো। তবে নতুন তিনটি কাহিনীচিত্র প্রচারিত হবে এবারের শোক দিবসের আয়োজনে। 

নাট্যকার ও গীতিকবি সহিদ রাহমানের গল্পে নির্মিত হয়েছে তিন কাহিনীচিত্র ‘পঁচাত্তরের লালু’ ‘প্রতিরোধযুদ্ধে দুই বীর’ ও ‘রক্তস্নাত আগস্ট’। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের অন্ধকারতম ঘটনা নিয়ে লেখা সহিদ রাহমানের ‘মহামানবের দেশে’ গ্রন্থ থেকে গল্প তিনটি নেওয়া হয়েছে। এর আগে এই গ্রন্থের গল্প থেকে নির্মিত কয়েকটি কাহিনীচিত্র প্রশংসিত হয়েছে। 

নতুন কাহিনীচিত্র তিনটি নির্মিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যা পর প্রতিরোধযুদ্ধের তিনটি ঘটনা নিয়ে। এতে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় তারকারা। আজ সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে চ্যানেল আইয়ে প্রচার হবে ‘প্রতিরোধযুদ্ধে দুই বীর’। পান্থ শাহরিয়ারের চিত্রনাট্য ও আবু হায়াত মাহমুদের পরিচালনায় কাহিনীচিত্রটিতে অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন, আরমান পারভেজ মুরাদ, শতাব্দী ওয়াদুদ, জিয়াউল হাসান কিসলু প্রমুখ।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে একটি বেতারবার্তায় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার খবর শুনে থমকে যায় সারা দেশ। বিভিন্ন এলাকায় ঘাতকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হয়। চুপ থাকতে পারেন না চট্টগ্রামের মৌলভী সৈয়দ আর বগুড়ার আবদুল খালেক খসরুসহ অনেক তরুণ প্রতিরোধযোদ্ধা। প্রতিরোধযোদ্ধারা বন্দি হন, তাদের ওপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। ঘাতক দল জানতে চায়, কে এই প্রতিরোধযোদ্ধাদের মদদদাতা। মৃত্যু অবধারিত জেনেও মুখ বন্ধ রাখেন প্রতিরোধযোদ্ধারা। কারণ তারা চেয়েছিলেন জাতির জনকের হত্যার বিচারের দাবিতে শত শত মৌলভী সৈয়দ, খসরু এ দেশের কোনায় কোনায় জেগে উঠুক। 

আনিসুর রহমান বলেন, ‘প্রতিরোধযুদ্ধে দুই বীর কাহিনীচিত্রে আমি মৌলভী সৈয়দের চরিত্রে অভিনয় করেছি। যিনি দেশপ্রেমী একজন যুবনেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে মনেপ্রাণে ধারণ করতেন। তাই পরিবার, বাগদত্তা স্ত্রীকে ভুলে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে জীবন উৎসর্গ করেন। এটি চট্টগ্রামের একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত।’

আজ রাত ৯টায় এটিএন বাংলায় প্রচার হবে ‘রক্তস্নাত আগস্ট’। শ্রাবণী ফেরদৌসের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, রুনা খান, অপর্ণা ঘোষ, মাসুম বাশার প্রমুখ। পত্রিকার সম্পাদক আবিদ আজাদ ও তারই পত্রিকার ফটোসাংবাদিক বন্ধু রায়হান। বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যা মেনে নিতে পারেন না তারা। প্রতিবাদ করতে চাইলে ঘাতকরা তাদের কণ্ঠ রোধ করে। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আবিদকে পঙ্গু করে দেয়। কিন্তু আটকাতে পারে না তাদের চিন্তাকে। তারা স্বপ্ন দেখে এক দিন বিচার হবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের। 

তারিক আনাম খান বলেন, ‘আমি সৌভাগ্যবান যে বঙ্গবন্ধুকে অনেকগুলো কাহিনীচিত্রে আমি কাজ করেছি। এ ধরনের গল্পে কাজ করাটা এক ধরনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এবার যে রক্তস্নাত আগস্ট গল্পটি করেছি, সেটিতে আমি একটি পত্রিকার সম্পাদক। দেশ ও জাতিকে নিয়ে চরিত্রটির ভাবনা খুবই স্পষ্ট। চরিত্রটি মুক্তিযোদ্ধা ছিল, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। ঐতিহাসিক চরিত্রটি করতে পেরে ভালো লেগেছে। এর আগেও সহিদ রাহমানের গল্পে শোক দিবসের কাহিনীচিত্রে কাজ করেছি। সে কাজটি প্রশংসিত হয়েছিল। আশা করছি এবারের ভিন্নধর্মী কাহিনীচিত্রটি দেখেও দর্শক ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট নিয়ে এক ধরনের ধারণা পাবে।’

এদিকে গতকাল রাত ৯টা ৩০ মিনিটে একুশে টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে ‘পঁচাত্তরের লালু’। সাইয়েদ আহমাদের চিত্রনাট্যে কাহিনীচিত্রটি পরিচালনা করেছেন সাজ্জাদ সুমন। অভিনয় করেছেন আহমেদ রুবেল, জিয়াউল হাসান কিসলু, মোমেনা চৌধুরী ও শিশুশিল্পী যায়ান। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় ইছাপুর গ্রামের কিশোর লালু, সুরুজ কমান্ডার ও হারিছ মাস্টারের করুণ পরিণতি দেখানো হয়েছে এতে।

সহিদ রাহমান বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। দেশের প্রতি তার যে অসামান্য অবদান তা কারও সঙ্গে তুলনা করা যায় না। অথচ সেই দেশেরই কিছু লোক ক্ষমতার লোভে ষড়যন্ত্র করে সপরিবারে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এটি আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের অনুভূতি। তাই দেশের প্রতি তার অবদান এবং তার হত্যার পর যে বিদ্রোহ শুরু হয়, সে কথা সবাইকে জানানোর জন্য মহামানবের দেশে গ্রন্থ লিখেছি। তা থেকে অনেকগুলো কাহিনীচিত্র নির্মাণ করেছি, যাতে নতুন প্রজন্মও এই ঘৃণিত কাজকে ঘৃণা করে।’
এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি