ঢাকা, রবিবার   ২৫ মে ২০২৫

বিএনপি-ড. ইউনূস বৈঠক

সংস্কার ও বিচার ইস্যুতে ঐক্যমত, নির্বাচন প্রশ্নে জবাব পরে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:২২, ২৪ মে ২০২৫ | আপডেট: ২১:৪৬, ২৪ মে ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রাজনৈতিক অস্থিরতা, আস্থাহীনতা ও পারস্পরিক সন্দেহ যখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরকে গ্রাস করে ফেলেছে, তখন এমন একটি সময়েই মুখোমুখি বসেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। 

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যার এই বৈঠকটিকে শুধু রাজনৈতিক নয়, এটিই দেখা হচ্ছে হতে একটি সম্ভাব্য সমঝোতার সূচনা হিসেবে। 

বৈঠকের পর বিএনপি নেতারা স্পষ্ট করেই জানান, সরকার ও তাদের মধ্যে 'সংস্কার' ও 'জুলাই অভ্যুত্থানে দোষীদের বিচার' ও নির্বাচন বিষয়ে—গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। 'সংস্কার' ও 'জুলাই অভ্যুত্থানে দোষীদের বিচার' ইস্যুতে তারা দুপক্ষই সম্মতি দিয়েছে। তবে নির্বাচনের বিষয়ে সরকার তাদের অবস্থান পরে জানাবেন বলে জানিয়েছেন। 

বিএনপি মনে করে, একটি গ্রহণযোগ্য ও ভবিষ্যৎমুখী নির্বাচন আয়োজনের পূর্বশর্ত হলো প্রশাসনিক কাঠামোর রদবদল, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা এবং যারা অতীতে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা। কিন্তু ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার, ফ্যাসিস্টের বিচার ও নির্বাচন  বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বার্তা দেননি। বিএনপির ভাষায়, ‘সরকার শুনেছে, কিন্তু বলছে পরে জানাবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার যখন এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরবে, তখন তারা নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাবে। অর্থাৎ এখনই তারা বৈঠকের বিষয়ে সরাসরি কিছু বলতে চাচ্ছেন না। 

এদিকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এবং সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী ব্যক্তিগতভাবে এবং পারিবারিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে। তাই আওয়ামী লীগের বিচার সবচেয়ে বেশি দাবি করে বিএনপি। ফলে এই সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের বিচার অসম্পন্ন থাকলে বিএনপি ক্ষমতা গেলে স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে তা সম্পন্ন করবে।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সংস্কার কার্যক্রম অবিলম্বে শেষ করে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি বিএনপি জানিয়েছে বলেও জানান মোশাররফ।

তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে আলোচনা বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি। আমরা যা অনুমান করেছিলাম তার ওপর ভিত্তি করে একটা লিখিত বক্তব্য নিয়ে এসেছিলাম। সেটা প্রধান উপদেষ্টাকে দিয়েছি। সেই ভিত্তিতে আলোচনা করেছি।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা। যেকোনো উছিলায় নির্বাচন যত বিলম্ব করা হবে আমরা মনে করি জাতির কাছে আবার স্বৈরাচার পুনরায় ফিরে আসার ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকার এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ওপর বর্তাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি প্রথম থেকেই একটি সুস্পষ্ট জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করে আসছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, বিএনপি কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়নি, বরং প্রথম থেকেই এ সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি