ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন কাল

বাদল রায় স্বাধীন

প্রকাশিত : ১৮:০৭, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

দীর্ঘ ৮ বছর পর সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামিকাল ৩০ নভেম্বর। এই উপলক্ষে প্রার্থী, নেতা কর্মী ও কাউন্সিলরদের মাঝে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। কেউ কেউ একটু বিব্রত সময়ও কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে। কাউন্সিলকে ঘিরে পদ প্রত্যাশীরা ইতিমধ্যে লবিং ও ভোট চাওয়া শেষ করেও নিশ্চিত থাকতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ এখনো দৌড়ঝাঁপের মধ্যে রয়েছেন। চলছে ভোটারদের সর্বশেষ সমর্থন আদায়ের চেষ্টা। চলছে উপর মহলের আশির্বাদ নেওয়ার চেষ্টাও। 

দেশের বৃহৎ এ সংগঠনের উপজেলা কমিটির সভাপতি পদে দুই জন সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীরা সংখ্যা এক ডজনেরও বেশি। পদ প্রত্যাশীদের অনুসারী ও শুভাকাঙ্খিরা পছন্দের প্রার্থীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণায় সরব রয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার শাহজাহান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামকে নিয়ে তৃনমূলের নেতাকর্মীদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। 

সাধারণ সম্পাদক পদে পদ প্রত্যাশীদের তালিকা দীর্ঘ। এ পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ - সভাপতি হাজী ফোরকান উদ্দীন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান মাঈন উদ্দীন মিশন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. আলী খসরু,  যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন বেদন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান খাঁন শাহীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান বেলাল, দপ্তর সম্পাদক আবু তাহের, জেলা যুবলীগের অর্থ সম্পাদক আতিকুর রহমান ফরহাদ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ জামিল ফরহাদের নাম শোনা যাচ্ছে। 

বিগত ২০১১ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে, দীর্ঘ ৮ বছর পর সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে তাই তৃণমূল নেতাকর্মীদেরও আগ্রহের কমতি নেই। তবে কাউন্সিলে দলীয় আদর্শে বিশ্বাসী ত্যাগী আর নিবেদিতদের স্থান দিতে আহবান জানিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। 

৫৭০ জনকে উপজেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক জনের আগ্রহ থাকায় কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত করা হতে পারে এমন ধারণা সকলের।

কাউন্সিলরবৃন্দ সম্মেলনে নতুন না পুরাতন- কাদের দায়িত্বশীল পদে বেছে নেন এটাই এখন দেখার বিষয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ বি এম  ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম ও সন্দ্বীপের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা এমপি।  

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার শাহজাহান বলেন, দীর্ঘ দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালন করে আসছি। দলের যেকোন দুঃসময়ে ছিলাম এবং আমৃত্যু থাকবো। যদি তৃনমূলের নেতাকর্মীরা মনে করে আমি থাকলে উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য মঙ্গলজনক হবে তাহলে আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সভাপতি পদ প্রত্যাশী সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন ৭৫ পরবর্তী দলের দুঃসময়ে হাল ধরেছিলাম। দলের যেকোন আন্দোলন সংগ্রামে ওতপ্রোত জড়িত ছিলাম। আশা করি দলের নীতিনির্ধাকরা এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আমাকে সভাপতি পদে নির্বাচিত করবেন। 

সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী মশিউর রহমান বেলাল বলেন, দলের ক্লান্তিলগ্নে ছাত্ররাজনীতি করেছি। তৃনমূলের নেতাকর্মীদের সাথে আমার সম্পর্কও ভালো। জননেত্রী শেখ হাসিনা মাদক সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের সাথে সবসময় আমার অবস্থান সু-দৃঢ় ছিলো, আশা করছি কাউন্সিলররা আমাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবে।

যুগ্ন সম্পাদক আলাউদ্দিন বেদন বলেন, আমি দীর্ঘসময় যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেছি তাই অগ্রাধীকার ভিত্তিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব আমি পাওয়ার কথা। এখন কাউন্সিলররা আশা করি আমাকে সেভাবে মুল্যায়ন করবে। 

জেলা যুবলীগের অর্থ সম্পাদক আতিকুর রহমান ফরহাদ বলেন, আমি সবসময় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজনীতি করেছি। দলের এবং নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে পাশে ছিলাম। সরাসরি ভোটে আমি সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, এবারের কাউন্সিল অধিবেশনকে সামনে রেখে যেভাবে ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে তাতে আমাদের বিশ্বাস উপজেলা কাউন্সিল অধিবেশনে তৃণমূলের নেতারাই সেভাবে নেতৃত্ব নির্বাচন করবে। আমি মনে করি তাতে দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের মূল্যায়ন হবে।

এমপি মন্ত্রীদের উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার বিষয়ে বিধি নিষেধ থাকায় সন্দ্বীপের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা সভাপতি পদে আগ্রহী নয় বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন। 

এমপি মিতা আরো বলেন  বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার শাহজাহান এর নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগ এখনো পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আছে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের বটবৃক্ষ। পুনরায় তিনি সভাপতি হলে উপজেলা আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হবে বলে নেতৃস্থানীয়রা মনে করছেন। তাই আমি মনে প্রাণে চাইব মাস্টার শাহজাহান আবারও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হোক। কারণ তিনি আমার পিতার মতো। আগামী দিনে আমরা বাবা ছেলে মিলে উপজেলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করে যাব।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি