ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

সাবেক এমপিপুত্রের বিরুদ্ধে শিশু কন্যাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:২৬, ২ জানুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১৯:২৮, ২ জানুয়ারি ২০২২

সংবাদ সম্মেলনে মেয়ে ও নির্যাতিত নাতনিসহ মাগফুরা আহমেদ

সংবাদ সম্মেলনে মেয়ে ও নির্যাতিত নাতনিসহ মাগফুরা আহমেদ

নিজের শিশু সন্তানকে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও চিকিৎসক ইব্রাহিম রহমান রুমির বিরুদ্ধে। তিনি ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির উপদেষ্টা মসিউর রহমানের বড় ছেলে।

রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ তোলা হয়। এসময় নিজেকে অসহায় দাবি করে নিজের নাতনির প্রতি ন্যাক্কারজনক এ অন্যায়ের বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান অভিযুক্তের শাশুড়ি মাগফুরা আহমেদ।

লিখিত বক্তব্যে মাগফুরা আহমেদ বলেন, ২০১৬ সালের ২৬ জুন পারিবারিকভাবে ঝিনাইদহের সাবেক এমপি মসিউর রহমানের ছেলে ইব্রাহিম রহমান রুমির (বাবু) সঙ্গে আমার মেয়ে আফিয়া বিনতে শাহের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। 

এসময় অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, বিয়ের দুই মাস পর সামান্য কারণে আমার মেয়েকে বেধড়ক মারধর করে রুমি। এরপর বিভিন্ন সময়ে যৌতুক চেয়ে নির্যাতন করতো সে। সন্তান গর্ভে থাকাকালেও আমার মেয়েকে মারধর করা হয়। সংসার জীবনে বনিবনা না হওয়ায় গত বছরের ২৬ আগস্ট তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।

লিখিত বক্তব্যে মাগফুরা আহমেদ বলেন, অব্যাহত নির্যাতনের কারণে আমি ২০১৭ সালে মেয়েকে ইতালি নিয়ে যাই। তখন আমার মেয়ে গর্ভবতী ছিল। এরপর মেয়েকে বুঝিয়ে দেশে আনার ১৫ দিন পর আবারও তার ওপর নির্যাতন শুরু করে তাঁর স্বামী। সন্তান জন্মের পরও নানা অজুহাতে দিনকে দিন নির্যাতন বাড়তে থাকে। সে সময় ঝিনাইদহ থানা পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করে।

বিবাহ বিচ্ছেদের পর চলতি বছরের ২৩ মার্চ বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪টায় আমার মেয়ের অনুপস্থিতিতে তাঁর চার বছরের শিশুকন্যাকে উত্তরার বাসা থেকে নিয়ে যান রুমি। গত ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রুমি তাঁর কন্যাকে কলাবাগানের বাসায় নিজ হেফাজতে রাখেন। ওই সময় ফেরত চাইলেও কন্যাকে নিতে দেননি রুমি। পরে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের আদেশে কন্যাশিশুকে হেফাজতে নেয় তাঁর মা। 

২০২১ সালের ১২ অক্টোবর রাত আনুমানিক ৮টায় আবারও শিশুসন্তানকে নিজের কলাবাগানের বাসায় আনেন ইব্রাহিম রহমান রুমি। পরদিন ১৩ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে শিশুর মা কলাবাগান থেকে চার বছরের শিশুটিকে উত্তরায় নিজের বাসায় ফিরিয়ে আনেন। বাসায় আনার পর পরিহিত পোশাক পরিবর্তনকালে মেয়ের শরীরে নির্যাতনের ছাপ দেখতে পান তিনি।

অভিযোগ করে শিশুটির নানি বলেন, গত ২৩ মার্চ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর এবং ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর দুপুর ১২টা পর্যন্ত রুমির বাসায় বাচ্চাটির অবস্থানকালে বিভিন্ন সময়ে শিশুর ওপর নিপীড়ন চালানো হয়। এরপর গত ২৭ নভেম্বর বিকালে নিপীড়নের শিকার শিশুসন্তানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁর মা। চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শিশুটিকে ওসিসিতে (ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) ভর্তির জন্য রেফার করেন। গত ২৭, ২৮ ও ২৯ নভেম্বর নির্যাতনের শিকার শিশুটির যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। পরে আমার মেয়ে কলাবাগান থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলার পর ইব্রাহিম রহমান রুমি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাঁকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। আমি ধর্ষক ও মাদকাসক্ত ইব্রাহিম রহমান রুমির বিচার চাই।

এসময় তিনি, মামলার আসামি ইব্রাহিম রহমান রুমি চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হলেও তাঁর বিরুদ্ধে এমন পৈশাচিক মামলার পর কেন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না- মর্মে প্রশ্ন তোলেন।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি