ঢাকা, সোমবার   ০৫ মে ২০২৫

হাক্কানির সঙ্গে বসতে পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৩, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৭:৫৮, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

প্রকাশ্যে আফগান তালেবান ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও গোপনে জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য পাকিস্তানকে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

অভিযোগ ওঠেছে, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান তত্ত্বাবধানকারী মার্কিন শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল জোসেফ ভোটেল হাক্কানিকে আলোচনায় বসাতে রাজি করানোর জন্য পাকিস্তানি সেনাপ্রধান জাভেদ বাজওয়াকে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র আর তাদের মিত্ররা ধারাবাহিক অভিযোগ করে আসছে, আফগান তালেবান ও তাদের মিত্র হাক্কানি নেটওয়ার্ককে পাকিস্তানে ‘নিভৃত আবাস’ গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে ইসলামাবাদ।

নতুন বছরের টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিথ্যাচার ও সন্ত্রাসবাদে মদদের অভিযোগ তুলে পাকিস্তানে সহায়তা বন্ধের হুমকি দেওয়ার পর ৫ জানুয়ারি নিরাপত্তা সহযোগিতা স্থগিতের ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন।

হাক্কানি নেটওয়ার্ক, তালেবান ও লস্কর-ই-তৈয়বার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে পাকিস্তান তহবিল যুগিয়ে যাচ্ছে বলে ক্রমাগত অভিযোগ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে ট্রাম্পের ঘোষণার পর দেশটিতে অর্থনৈতিক সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে দেশটির সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্নের হুমকি দিয়ে আসছে পাকিস্তান। বিশেষ করে তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান ইমরান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের হুমকি দিয়েছেন।

এদিকে পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলেও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ম্যাটিসের ভাষায় পাকিস্তানে অর্থসহায়তা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি। তাই জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানকে জড়িয়ে আবারও নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র, এমনই আশঙ্কা পাকিস্তান শিবিরে।

যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে শান্তি আলোচনার তাগিদ দিয়েছে দাবি করে এক পাকিস্তানি কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি তিন সদস্যের তালেবান প্রতিনিধি পাকিস্তানে আলোচনার জন্য এসেছিল। এই সফর আলোচনার অংশ কি না সেটি নিশ্চিত করে কিছু বলেননি ওই কর্মকর্তা। তবে তিনি সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তালেবানের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা ইসলামাবাদ সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে তালেবান নেতার উদ্বৃতি দিয়ে পাকিস্তানি একটি পত্রিকা জানিয়েছে, ইসলামাবাদের বৈঠকে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন তালেবানের কাতার শাখার নেতা সাহাবুদ্দিন দেলোয়ার ও জান মোহাম্মদ। এছাড়া ওই দলে ছিলেন তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মুহাম্মদ ওমরের শ্যালক মোল্লা জ্যাকব। তারা আফগানিস্তানের জাতীয় ইসলামিক ফ্রন্টের প্রধান পীর সাইদ হামিদ গিলানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

উল্লেখ্য, ৯/১১ হামলার পর ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। আল কায়েদাকে সমর্থন ও আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী ওই যুদ্ধে তালেবানরা ক্ষমতা থেকে উৎখাত হলে মার্কিন সমর্থনে সেখানে নতুন সরকার গঠিত হয়। কয়েক দফা সাধারণ নির্বাচনে সেই ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও ১৬ বছরেও শেষ হয়নি সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধ।

এরইমধ্যে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি আশরাফ ঘানি জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করলে দেশটির বর্তমান সরকার তিনদিনও টিকবে না। এমতাবস্থায় পাকিস্তানের উপর চাপ প্রয়োগকে অনেকেই মার্কিন স্বার্থের অংশ হিসেবে বিবেচনা করছেন।

সুত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
এমজে/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি