ঢাকা, রবিবার   ০৪ মে ২০২৫

২০১৬ থেকে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে মিয়ানমার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:০৩, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

Ekushey Television Ltd.

মিয়ানমার থেকে জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে গত ২০১৬ সালের অক্টোবর তার পরে আসা নাগরিকদের ফেরত নিতে রাজি হয়েছে দেশটি

শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। মিয়ানমার সফর করে দেশটির সঙ্গে একটি সম্মতিপত্র সই করে এসে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সদ্য স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী গত ৯ অক্টোবর ২০১৬ এবং ২৫ আগস্ট ২০১৭ এর পরে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের ফেরত নেবে দেশটি। এই চুক্তির অধীনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পর ৯ অক্টোবর ২০১৬ এর আগে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারীদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৯ অক্টোবর সেনা অভিযানের মুখে ৮৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর নতুন করে বাংলাদেশে আসে সোয়া ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে জাতিগত দমন-পীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আরও চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী জীবন কাটাচ্ছে।

১৯৯২ সালের দ্বিপক্ষীয় একটি চুক্তির আওতায় মিয়ানমার কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত নিলেও পরে আর এগোয়নি। ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২০১৬ সালের আগে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলাদাভাবে আলোচনার কথা নতুন সম্মতিপত্রে বলা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

নতুন করে গণহত্যা ও ধর্ষণের মতো দমন-পীড়নের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসার পর আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আলোচনায় সম্মত হয় মিয়ানমার। এবার সাক্ষরিতে চুক্তিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যুক্ত করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ১৯৯২ সালের চুক্তির অনুসরণেই সম্মতিপত্র হয়েছে।

আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন এবং ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ চূড়ান্ত করা হবে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ এই চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করবে।

মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়ার পর তাদের পছন্দ অনুযায়ী কাছাকাছি কোনো স্থানে পুনর্বাসিত করা হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে সীমিত সময়ের জন্য রাখা হবে। এই প্রক্রিয়ায় চীন ও ভারতের সহযোগিতা নেওয়ার কথা আলোচনা হয়েছে।

আগের চুক্তির অনুসরণে কেন চুক্তি হল, এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, মিয়ানমার ওই চুক্তি অনুসরণ করতে চায় আর আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো। মূলকথা হলো, দেশটি রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে রাজি হয়েছে। আশ্রয়হীন লোকগুলোর সেখানে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে, সেটার কাজও শুরু হয়েছে।

দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে বলে জানালেও কবে নাগাদ শেষ করা হবে তার কোনো সুনির্দিষ্ট সময় চুক্তিতে নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানান মন্ত্রী। মন্ত্রীর মতে, যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই প্রত্যাবাসন সম্পন্ন করতে দুইপক্ষ সম্মত।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই সফরে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষা, জ্বালানি, বাণিজ্য খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা করেন মাহমুদ আলী।

/ আর / এআর

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি