আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি, নিহত ৪
প্রকাশিত : ১৪:৫২, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী উত্তেজনাপূর্ণ এলাকায় শুক্রবার রাতে গোলাবর্ষণ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার জন্য উভয়পক্ষই একে অপরকে অভিযুক্ত করেছে।
হামলা শুরুর পর রাতে আফগান সীমান্তের শহর স্পিন বোল্ডাক থেকে বাসিন্দারা পালিয়ে যায়। কান্দাহারের একটি চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্মী বিবিসি পশতুকে জানান, সেখানে চার জনের মরদেহ আনা হয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানে তিন জন আহত হয়েছেন।
উভয়পক্ষ থেকেই বিনা উস্কানিতে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে, আর এই ঘটনা সীমান্তে পূর্বেই বিদ্যমান তীব্র উত্তেজনাকে আরও উস্কে দিয়েছে।
আফগানিস্তানের তালেবান সরকার জানিয়েছে, পাকিস্তানি বাহিনী কান্ধাহার প্রদেশের স্পিন বোলদক এলাকায় হামলা চালায়।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিহ উল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে, আজ রাতেই পাকিস্তানি বাহিনী আফগানিস্তানে হামলা শুরু করে। ইসলামী আমিরাতের বাহিনী বাধ্য হয়ে জবাব দিয়েছে।’
তবে, এ সময় তিনি এই সংঘর্ষ সম্পর্কে বিস্তারিত কোন তথ্য প্রকাশ করেননি।
অপরদিকে, পাকিস্তান সরকার শনিবার সকালে অভিযোগ করে বলেছে, আফগান তালেবান বাহিনী সীমান্তে হামলা চালিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র মোশাররফ জায়েদি বলেন, ‘মাত্র কিছুক্ষণ আগে আফগান তালেবান সরকার সীমান্তে বিনা উস্কানিতে আমাদের ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।’
সীমান্তবর্তী এলাকার স্থানীয়রা এএফপিকে জানিয়েছেন, এই সংঘর্ষ রাত ১০টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলেছে। এ সময় ব্যাপক গোলাবর্ষণ করা হয়।
কান্দাহারের তথ্য বিভাগের প্রধান আলি মুহাম্মদ হাকমাল দাবি করেন যে সংঘর্ষের সময়ে পাকিস্তানি বাহিনী ‘হালকা ও ভারী অস্ত্র’ ব্যবহার করে এবং মর্টারের গোলা বেসামরিক নাগরিকদের বাড়িতেও আঘাত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সংঘর্ষ শেষ হয়েছে এবং উভয় পক্ষই সংঘাত বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী চামান শহরে অবস্থানরত এএফপি সংবাদদাতা বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন। আফগানিস্তান ও পাকিস্তান ২০২১ সালে তালেবান সরকার কাবুলে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে নিরাপত্তা সমস্যা ও সীমান্ত বিতর্ক নিয়ে ক্রমবর্ধমান তিক্ত সম্পর্কের মধ্যে রয়েছে।
ইসলামাবাদ অভিযোগ করে আসছে যে কাবুল পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) ও অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দিচ্ছে, আর এরা পাকিস্তানে হামলা চালায়। তবে তালেবান সরকার বরাবরই পাকিস্তানের এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
অক্টোবরে সংঘর্ষে ৭০ জনের বেশি নিহত ও শতাধিক আহত হন। সেই সময় কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় একটি শান্তিচুক্তি হয়। তবে দোহা ও ইস্তানবুলে একাধিক দফা আলোচনা হলেও স্থায়ী কোন সমাধান হয়নি।
আফগানিস্তান সম্প্রতি অভিযোগ করেছে, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের বিমান হামলায় সীমান্ত এলাকায় ১০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৯ জন শিশু। ইসলামাবাদ আফগানিস্তানের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সীমান্তবর্তী নিরাপত্তা ও উভয় দেশের মধ্যে আস্থা পুনঃস্থাপনের অভাব, এই ধরনের সংঘর্ষের মূল কারণ।
এএইচ
আরও পড়ুন










