ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ জুলাই ২০২৫

ইছামতীর তীরে দুই বাংলার রংহীন বিসর্জন 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:১৪, ৯ অক্টোবর ২০২১

Ekushey Television Ltd.

বিভিন্ন ঘটনার জেরে কয়েক বছর ধরে ইছামতীর বুকে বিজয়া দশমী উপলক্ষে দুই বাংলার মিলন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জৌলুস হারিয়ে রং ফ্যাকাসে হয়ে গেছে ইছামতির। এবছর করোনা পরিস্থিতির জেরে যেনো আরও বিসাদের সুর বয়ে আনল ঐতিহ্যবাহী ইছামতির ভাসান। 

করোনাভাইরাস মহামারীর জন্য প্রশাসনের কড়া নির্দেশ অনুযায়ী পূজা উদ্যোক্তাদের হাতেগুনা নৌকো নামার অনুমতি থাকলেও দর্শনার্থীদের ক্ষেত্রে নৌকা বিহারের কোনও অনুমতি থাকছে না।

টাকি পৌরসভার প্রশাসক 'সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়' জানান, “প্রতিমা নিয়ে যে সমস্ত পুজো কমিটি নৌকায় উঠবে তাদের ক্ষেত্রেও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এছাড়াও ভাসানের ক্ষেত্রে দুপুর ১ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট সময়ও।”

অন্যদিকে, বসিরহাট পৌরসভা এলাকায়ও ভাসানে রয়েছে কড়া বিধি। সময় নির্দিষ্ট করে না দিলেও প্রতিমার নৌকায় ৮ থেকে ১০ জনের বেশি উঠতে পারবে না বলে জানানো হয়েছে।। 

দীর্ঘ ২৫০-৩০০ বছর ধরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের উত্তর ২৪ পরগনার ইছামতী নদীতে ভাসান উপলক্ষে মিলেমিশে একাকার হয়ে এসেছে দুই বাংলা। ভাসান উপলক্ষে বিজয়ার দিন একত্রিত হতে পারত একপারে টাকি, হাসনাবাদ, বসিরহাট, হিঙ্গলগঞ্জ আর ওপারে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, ঘলঘলে, শ্রীপুর, পারুলিয়ার গ্রামের মানুষের পাশাপাশি ঢাকা থেকে আসা মানুষও। 

পরস্পরকে উপহার দেওয়ার মাধ্যমে গড়ে উঠত এক অনাবিল সৌহার্দ্যের পরিধি। ২০১১ পর্যন্ত এভাবেই মিলেমিশে এসেছে দুই বাংলা।

কিন্তু ২০১২ সাল থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ইছামতীর বুকে দুই বাংলার মিলন পর্ব। ইছামতীর ভাসান দেখতে এসে নদীতে নৌকা উলটে মৃত্যু হয় সুজয় দাস নামে যাদবপুরের এক গবেষকের। 

এছাড়াও অনুপ্রবেশের জেরে চুরি ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে টাকির বাসিন্দারা। ফলে ২০১২তে সীমান্তে বেড়ে যায় কড়াকড়ি। বন্ধ হয়ে যায় বিসর্জন পর্ব।

তবুও একদিনের জন্য ইছামতী নদীর বুকে জলসীমা অতিক্রম না করেই দুই বাংলা যেভাবে নৌকায় নামত তা কোনার প্রভাবে এবার আরও ফ্যাকাসে হয়ে গেল। যে মাঝিরা বছরভর অপেক্ষায় থাকেন পর্যটক এবং সাধারণ মানুষকে নৌকায় ভ্রমণ করানোর জন্য,এবার তাদেরও মাথায় হাত।

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

এমএম//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি