ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ জুলাই ২০২৫

কাঁদলেন এসপি হারুন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৪৪, ৭ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ২৩:২৫, ৭ নভেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বিদায় লগ্নে কেঁদেছেন। ৭ নভেম্বর দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। পরে বক্তব্য শেষেও কাঁদতে দেখা যায় তাঁকে।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে এসপি হারুন বলেন, এ স্টেশন থেকে আমার চলে যেতেই হবে। হয়তো এ পর্যন্ত আমার মেয়াদ ছিল। সে কারণে এতদিন চাকরি করেছি। আমার ছেলে এমনিতেই কথা বলে। কয়েকদিন আগে আমি আমার ছেলেকে বলেছি আমি তো নারায়ণগঞ্জ থেকে বদলী হয়ে গেছি। তখন আমার ছেলে শুনে কোন কথা বলে নাই। আমার ছেলের আর নারায়ণগঞ্জ পা দেওয়া হচ্ছে না। 

ওই বক্তব্য দিতে গিয়েই কেঁদে উঠেন এসপি হারুন। প্রায় মিনিট খানেক ধরেই তিনি বক্তব্য রাখেন। 

অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক জসিমউদ্দিন, র‌্যাব-১১ এর সিও কাজী শমসের, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান মাসুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তবে এসপি হারনের দাবি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে সমালোচিত হয়েছেন বলে তিনি কাঁদলেন। বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হারুন বলেন, সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে সমালোচিত হয়েছি। তবে তদন্তে এটি বের হবে।

এর আগে গত ৩ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন আর রশীদকে পুলিশ হেড কোয়ার্টারে বদলি করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেমের ছেলে শওকত আজিজের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় এসপি হারুনকে। তিনি বলেন, আমার কোনো সহকর্মীর দিকে কেউ পিস্তল তাক করবে, সেটা তো হতে পারে না। তাই ওই ব্যক্তি কত বড় সম্পদশালী বা শক্তিশালী সেটা আমি দেখিনি। কিন্তু বলা হয়েছে চাঁদা দাবি করেছি। মূল বিষয় হলো মামলা হয়েছে, পুলিশ রেইড দিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার (শওকত আজিজের) ছেলেকে আনা হয়েছিল, না স্বেচ্ছায় এসেছে। এগুলো আপনারা জানেন। তবুও বিদায়বেলায় আমি বললাম।
 
এ সময় তিনি আরও বলেন, এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। কথায় নয়, মন থেকে যেটা চেয়েছি সেটাই করেছি। নারায়ণগঞ্জে পুলিশের ইমেজ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের সহযোগিতা করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

নারায়ণগঞ্জে থাকা অবস্থায় মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন জানিয়ে এসপি হারুন বলেন, নারায়ণগঞ্জে দুই হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। কিছু ভুল থাকতেই পারে আমাদের। এরপরও যারা ভুল করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশন নিয়েছি। সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজের পক্ষে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, এমপি-মন্ত্রী কেউ তদবির করেননি। এটা আমাদের ভালো লেগেছে। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন হারুন। তার কান্না দেখে পুলিশের অন্য কর্মকর্তারাও আপ্লুত হয়ে পড়েন।

প্রসঙ্গত, পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেমের ছেলে শওকত আজিজের স্ত্রী ও পুত্রকে রাজধানীর গুলশান থেকে নারায়ণগঞ্জে তুলে নিয়ে যাওয়ার দুদিনের মাথায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে বদলি করা হয়।

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আয়োজিত বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, ব়্যাব-১১ এর সিইও কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, নূরে আলম ও সুবাস সাহা।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি