ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ আগস্ট ২০২৫

কারাগারের নাম পরিবর্তন করে ‘কারেকশন সার্ভিসেস বাংলাদেশ’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৫৭, ২৬ আগস্ট ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেছেন, কারাগার কেন্দ্রীক সংশোধনের বিষয়টির ওপর অধিক গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের কারাগারগুলোর নাম পরিবর্তন করে ‘কারেকশন সার্ভিসেস বাংলাদেশ’ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বকশীবাজার এলাকায় কারা অধিদপ্তরের সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। 

কারা বিভাগ সংশ্লিষ্ট আইন কানুন যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে কারেকশন সার্ভিস অ্যাক্ট-২০২৫ এর খসড়া চূড়ান্ত করে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে।

সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দিদের স্থান সংকুলাণের জন্য নতুন করে ২টি কেন্দ্রীয় এবং ৪টি জেলা কারাগার চালু করা হয়েছে। এছাড়াও অধিকতর সমন্বয়ের জন্য ঢাকা বিভাগকে ভেঙে ২টি বিভাগ করা হয়েছে। 

কারা বিভাগের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি মুক্ত রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে জানিয়ে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, কারা বিভাগ কর্তৃক অনুসৃত আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর নিয়োগ পদ্ধতি সরকারি দপ্তর এবং সংস্থাসমূহের নিয়োগের ক্ষেত্রে মডেল নিয়োগ পদ্ধতি হিসাবে বিবেচনার দাবী রাখে। ফলে একদিকে যেমন দালাল চক্রের দৌরাত্ম কমেছে অন্যদিকে প্রতিটি স্তরেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পেশাদার ভুয়া পরীক্ষার্থীও শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

কারাগারের নিরাপত্তায় নানা উদ্যেগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এআই নির্ভর সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ডিউটিসমূহে দায়িত্বরতদের বডি ক্যামেরা ব্যবহারের প্রচলন করা হয়েছে। এছাড়াও কম্প্রিহেনসিভ মোবাইল জ্যামিং সিস্টেম, বডি স্ক্যানার, লাগেজ স্ক্যানার, গ্রাউন্ড সুয়েপিং মেশিন এবং মোবাইল ডিটেক্টরসহ  নানা আধুনিক আধুনিক সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে কারাগারে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার কাজ চলমান আছে। এছাড়াও বন্দিদের উৎপাদনমুখী করার জন্য সুবিধাজনক স্থানে ‘কারেশনাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক’ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, বন্দী ব্যবস্থাপনায় তথ্য উপাত্ত নির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বন্দীদের কম্প্রিহেনসিভ ডাটাবেজ সমৃদ্ধকরণ করা হয়েছে। বন্দিদের টেলিফোন কল এরং দেখা সাক্ষাতের বিষয়টি ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনা হয়েছে। কারাগার থেকেই বন্দীরা অনলাইন ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচার কার্যে অংশগ্রহণ করতে পারছে।

তিনি আরও বলেন, বন্দীদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কারাগারে স্থান সংকুলান সাপেক্ষে নানাবিধ খেলাধুলা, সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানসহ নানাবিধ মনন চর্চার সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া তাদের সংশোধনের নিমিত্তে ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ কাউন্সিলিং এর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সেবা গ্রহণকারীরা বন্দী সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে হটলাইন সেবা (১৬১৯১) চালু করা হয়েছে। তাদের মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কেরাণীগঞ্জে ‘কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতাল’ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীও সেবা গ্রহণ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

মাদকাসক্তদের বিষয়ে কারা অধিদপ্তরের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত ১ বছরে মাদকসেবী ২৯ জন সদস্যকে মাদকের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ফৌজদারী মামলায় কারাগারে প্রেরণসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কারা সদর দপ্তরের জন্য নিজস্ব ডোপ টেস্টিং মেশিন সংগ্রহ করা হয়েছে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি