ঢাকা, সোমবার   ২৮ জুলাই ২০২৫

চলে গেলেন চিত্রনায়ক জসীম পুত্র রাতুল, সংগীতাঙ্গনে শোকের ছায়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:০০, ২৭ জুলাই ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

‘ওন্ড’ (WIND) ব্যান্ডের ভোকালিস্ট, বেজিস্ট ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার এ কে রাতুল আর নেই। শনিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর উত্তরার একটি জিমে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। রাতুল ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়ের সুপারস্টার চিত্রনায়ক জসীমের ছেলে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৪২ বছর।

রাতুলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন ব্যান্ডটির গীতিকার ও বন্ধু সিয়াম ইবনে আলম। 

তিনি জানান, প্রতিদিনের মতো শনিবার বিকেলে উত্তরা এলাকার একটি জিমে শরীরচর্চা করছিলেন রাতুল। হঠাৎ করে তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করেন এবং মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর দ্রুতই স্থানান্তর করা হয় লুবানা জেনারেল হাসপাতালে। তবে চিকিৎসকেরা দীর্ঘ চেষ্টার পরও তাঁকে বাঁচাতে পারেননি। সন্ধ্যার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এদিকে রাতুলের অকালমৃত্যুতে পরিবার, বন্ধু, সহশিল্পী ও ভক্তদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সংগীতজগতের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। রাতুল ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী শিল্পী। শুধু গায়ক বা বেজ গীটারিস্টে হিসেবেই নয়, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবেও বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর হাতে অনেক তরুণ শিল্পীর গান পেয়েছে নতুন জীবন।

এ কে রাতুল ছিলেন ৯০ দশকের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র অভিনেতা ও অ্যাকশন হিরো জসীমের ছেলে। প্রয়াত জসীম ছিলেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় মুখ। ‘বর্ণালী’, ‘ভন্ড’, ‘অমর’, ‘দাঙ্গা’ সহ অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মাত্র ৪৮ বছর বয়সে জসীমের মৃত্যু হয়।

নায়ক জসীমের তিন ছেলে—এ কে রাহুল, এ কে রাতুল ও এ কে সামী—তাঁদের কেউই বাবার মতো চলচ্চিত্রে আসেননি। তবে তাঁরা সকলে সংগীতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাহুল ‘ট্রেনরেক’ ব্যান্ডের গিটারিস্ট ও ‘পরাহো’ ব্যান্ডের ড্রামার। রাতুল ও সামী ছিলেন ‘ওন্ড’ ব্যান্ডের সদস্য। সামী ড্রামার, আর রাতুল ছিলেন ব্যান্ডের মুখ্য ভোকাল এবং বেজিস্ট। তাঁদের ব্যান্ড ‘ওন্ড’ ধীরে ধীরে সংগীতপ্রেমীদের মাঝে পরিচিতি পাচ্ছিল।

রাতুল ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন ভীষণ বিনয়ী ও নম্র স্বভাবের। বন্ধুদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ। যারা তাঁকে চিনতেন, তারা জানতেন—রাতুল একজন গভীর সংগীতপ্রেমী এবং নিষ্ঠাবান শিল্পী। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে বন্ধু, সহকর্মী ও ভক্তদের মধ্যে গভীর শোকের সৃষ্টি হয়েছে।

বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে রাতুলের মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়েছেন সংগীত জগতের অনেকে। অনেকে বলছেন, ‘রাতুল শুধু একজন শিল্পী ছিলেন না, তিনি ছিলেন একখানা ভালোবাসা দিয়ে তৈরি মানুষ।’ তাঁর মৃত্যুতে ব্যান্ড ‘ওন্ড’-এর ভবিষ্যত নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

এদিকে রাতুলের মরদেহ বর্তমানে রাজধানীর একটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পারিবারিক পরামর্শে। ইতোমধ্যে চলচ্চিত্র ও সংগীত অঙ্গনের অনেকেই তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতে হাসপাতালে বা রাতুলের বাসায় ছুটে গেছেন।

এসএস//
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি