জরিপ: বিএনপি-জামায়াতের জনপ্রিয়তা কমেছে, বেড়েছে এনসিপির
প্রকাশিত : ২০:৩০, ১১ আগস্ট ২০২৫

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা যায়, কয়েক মাস আগের জরিপের চেয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর জনপ্রিয়তা কমেছে। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমর্থন কিছুটা বেড়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়ন, সংস্কার, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা নিয়ে’ জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা বিআইজিডি’র জরিপে সহায়তা করেছে ভয়েস ফর রিফর্ম।
'জনগণের মতামত, অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা জুলাই ২০২৫' শীর্ষক জরিপটি সারাদেশের ৬৪ জেলায় ৫ হাজার ৪৮৯ জন নারী ও পুরুষের মধ্যে টেলিফোনে পরিচালিত হয়। চলতি বছরের ১ থেকে ২০ জুলাই এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম, জনগণের সংস্কার প্রত্যাশা এবং আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর জনসমর্থন বিষয়ে মতামত নেওয়া হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, যারা ভোট দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের মধ্যে ১২ শতাংশ মানুষ বিএনপিকে, ১০ দশমিক চার শতাংশ মানুষ জামায়াতে ইসলামীকে, সাত দশমিক তিন শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগকে এবং দুই দশমিক আট শতাংশ মানুষ এনসিপিকে ভোট দিতে চান বলে জানিয়েছেন।
কিন্তু আট মাস আগে গত অক্টোবর মাসে একই প্রশ্ন করা হলে ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ মানুষ বিএনপি, ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ জামায়াত ও দুই শতাংশ মানুষ এনসিপিকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।
অর্থাৎ জরিপ অনুযায়ী আট মাস পরে বিএনপি ও জামায়াতের ভোট কিছুটা কমলেও এনসিপির ভোট সামান্য বেড়েছে।
পাশাপাশি, ২০২৪ সালের অক্টোবরে অন্যান্য ইসলামিক দলের প্রতি সমর্থন ২ দশমিক ৬ শতাংশ থাকলেও চলতি বছরের জুলাইয়ে সেটি শূন্য দশমিক ৭ শতাংশে নেমেছে।
এদিকে, কোন দলকে ভোট দেবেন— এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি ৪৮ শতাংশেরও বেশি মানুষ।
২০২৪ সালের অক্টোবরে এই হার ছিল ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ।
জরিপ অনুযায়ী, ভোট না দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ১ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ। আর কাকে ভোট দেবেন তা জানাতে চাননি ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা, যা গত অক্টোবরে ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ।
জরিপে দেখা যায়, ২৭ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের মধ্যে বিএনপির চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ জামায়াতকে ভোট দিতে চায়।
বয়সভেদে দলগুলোর জনসমর্থন নিয়ে যে জরিপ ফলাফল উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে দেখা যায়, ২৭ বছরের নিচে ৯ শতাংশ মানুষ বিএনপিকে, ১২ শতাংশ জামায়াতে ইসলামীকে, সাত শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগ এবং চার শতাংশ মানুষ এনসিপিকে ভোট দিতে চায়।
আবার ২৮ থেকে ৩৫ বছরের মানুষের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের জনপ্রিয়তা সমান দেখা গেছে। অর্থাৎ এই বয়সের ১১ শতাংশ মানুষই বিএনপি ও জামায়াতকে ভোট দিতে চায়।
তবে ৫০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে বিএনপির জনপ্রিয়তা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। পঞ্চাশোর্ধ ১৬ শতাংশ মানুষ বিএনপি, ৯ শতাংশ মানুষ জামায়াত, ৭ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগ এবং চার শতাংশ মানুষের সমর্থন এনসিপির প্রতি।
অন্যদিকে, শিক্ষার স্তরভেদেও রাজনৈতিক দলগুলোর জনসমর্থনের বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা গেছে। গ্রাজুয়েটদের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াত উভয়েরই প্রতিই জনসমর্থন রয়েছে শতকরা ১০ শতাংশ করে। গ্রাজুয়েটদের মধ্যে পাঁচ শতাংশ আওয়ামী লীগ এবং চার শতাংশ লোকের সমর্থন এনসিপির প্রতি।
আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই এমন মানুষের মধ্যে আবার বিএনপির জনসমর্থন বেশি। এই ক্যাটাগরির ১৪ শতাংশ মানুষের সমর্থন বিএনপির প্রতি, জামায়াতের প্রতি ৯ শতাংশ, ৭ শতাংশ আওয়ামী লীগ এবং দুই শতাংশ মানুষের সমর্থন এনসিপির প্রতি।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষ মনে করে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, আর ১৫ শতাংশ মানুষ মনে করে সুষ্ঠু হবে না আগামী নির্বাচন।
এএইচ
আরও পড়ুন