ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভারতে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশিদের বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪৩, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

আসাম সরকার সূত্রে খবর, সরকার নিজে বিদেশিদের বহিষ্কারের এ কাজ করবে না, সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী বিএসএফ'কে এই দায়িত্ব দেয়া হবে। অবৈধ অভিবাসী হিসেবে সন্দেহভাজন ব্যক্তি তার ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য ১০ দিনের সময় বেঁধে দেয়া হবে।

ভারতে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশিদের বহিষ্কার ত্বরান্বিত করতে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসামের বিজেপি সরকার। আসাম মন্ত্রিসভা বিদেশিদের বহিষ্কারের জন্য একটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি অনুমোদন করেছে। এর ফলে, মাত্র ১০ দিনের বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সরাসরি অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত ও বহিষ্কার করতে পারবেন।

১৯৫০ সালের ইমিগ্রেশন আইন অনুসারে, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল সরাসরি অভিবাসী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। নতুন আদেশের পরে কোনও ব্যক্তিকে যদি বিদেশি বলে সন্দেহ করা হয়, তাহলে তাকে তার সমস্ত আইনি নথি ডেপুটি কমিশনার (ডিসি)-কে দেখাতে হবে। এর পরে, ডিসি এবং অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার ১০ দিনের মধ্যে নথিগুলো পরীক্ষা করবেন এবং যদি তারা নথিতে সন্তুষ্ট না হন, তাহলে তারা ১১ তম দিনে ওই ব্যক্তিকে একটি হোল্ডিং সেন্টারে পাঠাবেন। সেখান থেকে, তাদের ছাড়পত্র দেয়া যেতে পারে।

আসাম সরকার সূত্রে খবর, সরকার নিজে বিদেশিদের বহিষ্কারের এ কাজ করবে না, সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী বিএসএফ'কে এই দায়িত্ব দেয়া হবে। অবৈধ অভিবাসী হিসেবে সন্দেহভাজন ব্যক্তি তার ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য ১০ দিনের সময় বেঁধে দেয়া হবে। এরমধ্যে শুনানির মাধ্যমে ডেপুটি কমিশনার যদি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে ব্যক্তিটি একজন বিদেশি, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে আদেশ জারি করা হবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বাস শর্মা এসব জানান। ডিসির আদেশের পর, সরকার ওই ব্যক্তিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাবে। তারপর বিএসএফের সহায়তায় তাদের বিদেশে নির্বাসন দেয়া হবে।

যদি জেলা প্রশাসক কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারেন, তাহলে সেক্ষেত্রে মামলাটি আরও বিচারের জন্য ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। এই প্রক্রিয়ার ফলে আসাম সরকারের পক্ষে বিদেশিদের খুঁজে বের করা এবং তাদের শনাক্ত করার পর তাদের দেশে ফেরত পাঠানো অনেক সহজ হবে।

যেসব ক্ষেত্রে ডিসি বিভ্রান্ত হবেন বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে অসামর্থ হবেন, বিশেষ করে ১৯৭১ সালের পরে নাগরিকত্বের বিষয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, তখন বিষয়টি ট্রাইব্যুনালে যাবে। যদি ট্রাইব্যুনাল নির্ধারণ করে যে ব্যক্তিটি আসলে বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের নাগরিক, তাহলে তাকে অবিলম্বে নির্বাসিত করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান , আসামে প্রবেশের ১২ ঘণ্টার মধ্যে কোনও বিদেশির বিচার করার প্রয়োজন নেই। ডিসি-এডিসি অবিলম্বে বিদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠাতে পারেন।এনআরসি-তে নাম থাকলেও একজন ব্যক্তিকে নির্বাসিত করা যেতে পারে। এনআরসি-র সাথে অভিবাসী বহিষ্কার আইনের কোনও সম্পর্ক নেই। এনআরসি-তে নাম থাকার অর্থ এই নয় যে একজন ব্যক্তি স্থানীয় বা ভারতীয়। এমনকি যদি আপনার নাম এনআরসি-তে থাকে, তবুও যদি আপনি বিদেশী প্রমাণিত হন তবে আপনাকে নির্বাসিত করা হবে। সুপ্রিম কোর্টও রায় দিয়েছে যে এনআরসি-তে নাম থাকা ব্যক্তি ভারতীয় নয়।

আসাম থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩০,১২৮ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রকাশের পর এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) থেকে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এর বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি