ঢাকা, বুধবার   ১৪ মে ২০২৫

মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩৯, ২৭ জুন ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে মিয়ানমারের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

মঙ্গলবার (২৬ জুন) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জমা দেওয়া এক প্রতিবেদনে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে প্রাপ্ত ফলাফলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাছে উপস্থাপন, মিয়ানমারের ওপর বড় ধরনের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সেখানকার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের অনুরোধ জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের ঘটনায় মিয়ানমারকে বিচারের আওতায় নেওয়া যায় কিনা? সেই প্রশ্নে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে এরই মধ্যে একটি তদন্ত চলমান রয়েছে।   

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ চাইলে অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনটিকেও নিজেদের তদন্তের আওতায় নিতে হবে আইসিসিকে। তবে এ ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি দেশ রাশিয়ার প্রতিনিধি দল কিংবা জাতিসংঘে মিয়ানমারের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। সরকারের মুখপাত্রের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি। 

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে সেদেশের সেনাবাহিনী। এতে খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে পড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা অধিবাসী। এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘ। গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকেও রোহিঙ্গা নিপীড়নকে নিধনযজ্ঞ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে অনুসন্ধান শুরু করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মঙ্গলবার (২৬ জুন) অ্যামনেস্টির প্রতিবদনে বলা হয়, ‘উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের সাজা দেওয়া ও তাদেরকে দেশছাড়া করার লক্ষ্যে সেনা নেতৃত্বে যে অভিযান চালানো হয়েছে তা কাঠামোবদ্ধ হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞের শামিল।

‘মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লায়াং, ভাইস সিনিয়র জেনারেল সোয়ে উয়িন এবং ‘অনেকগুলো নৃশংসতা সংঘটনকারী’ সেনা ইউনিটের কমান্ডারদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানানো হয় প্রতিবেদনে।

এছাড়া সেখানে আরও আটজন সেনা সদস্য ও বর্ডার গার্ড পুলিশের তিন সদস্যের নামও উল্লেখ করা হয়েছে।

অ্যামনেস্টি তাদের প্রতিবেদনে বলছে,  উপর থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে বা সরাসরি নিজের সিদ্ধান্তে কিংবা দু’ভাবেই যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়েছে তাদেরকে ন্যায়বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছে রয়টার্স।

এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সনদে স্বাক্ষর করেনি মিয়ানমার। মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবীদের মতে, নিপীড়নের কারণে যেহেতু কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের মাধ্যমে এ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ। বাংলাদেশ অপরাধ সংঘটনের দায়ে সন্দেহভুক্ত নয়, কিন্তু এ দেশ রোহিঙ্গা নিধনের বিচারের পথ খুলে দিতে পারে।

কেআই/এসি 

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি