রিজার্ভ চুরি: ফিলিপাইনে থাকা ৮১ মিলিয়ন ডলার বাজেয়াপ্ত
প্রকাশিত : ১৪:২১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৬:২৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ২০১৬ সালে চুরি হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারে বড় অগ্রগতি হয়েছে। আদালতের আদেশে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) অ্যাকাউন্টে থাকা ৮১ মিলিয়ন ডলার বাজেয়াপ্ত করেছে।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আদালতের মাধ্যমে সিআইডি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার বাজেয়াপ্ত করেছে। পরবর্তী কর্মপন্থা কী হবে তা নির্ধারণ করার জন্য উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।’
সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুযায়ী দায়ের করা মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে ফিলিপাইনের আদালত এবং বাংলাদেশি আদালতের সহযোগিতায় এই অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ চুরির মামলায় অর্থ উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জিত হলো।
সিআইডির একটি সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ফিলিপাইনে থাকা অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে জমা দেওয়া হবে।
ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকে থাকা ৮১ মিলিয়ন ডলার বাজেয়াপ্তের বিষয়ে আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিআইডি একটি সংবাদ সম্মেলন করে। তারা জানায় ফিলিপিন্সের আরসিবিসি ব্যাংকে থাকা অর্থ বাজেয়াপ্ত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের একটি আদালত বৃহস্পতিবার আদেশ দেয়। আদেশের অনুলিপি ফিলিপিন্সের ব্যাংকটির উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
তবে আদালত নির্দেশ দিলেও কতদিনের মধ্যে অর্থ ফেরত আসবে বা ফিলিপিন্সের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক আদালতের আদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে কিনা, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারেনি সিআইডির প্রতিনিধি দল। তদন্ত পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারছেন না বলেও বলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রতিনিধি দল আশা প্রকাশ করে যে সিআরবিসি ব্যাংক তাদের সুখ্যাতি ধরে রাখতে অতিসত্বর এই অর্থ বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইফট ব্যবস্থা কাজে লাগিয়ে ৩৫টি ভুয়া বার্তার মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভের নিউইয়র্ক শাখায় বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০০ কোটি ডলার চুরির চেষ্টা চালান অপরাধীরা। এর মধ্যে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার লোপাট করতে সক্ষম হন তারা। এই অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যায় ২ কোটি ডলার, যে অর্থ অবশ্য উদ্ধার করা হয়েছে, তবে বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে ফিলিপাইনের বিভিন্ন ক্যাসিনোয় ঢুকে যায়।
পরে বাংলাদেশ ব্যাংক ফিলিপাইন থেকে প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মামলাটি ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ তৎকালীন বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক (হিসাব ও বাজেটিং) জোবায়ের বিন হুদা মতিঝিল থানায় দায়ের করেন। এরপর থেকে তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে সিআইডি।
এএইচ
আরও পড়ুন