ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে গ্রেপ্তার করেও ছেড়ে দিলো থানা পুলিশ
প্রকাশিত : ১৬:২৫, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
খুলনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ হারুন অর রশিদের দুর্নীতির সহযোগী হিসেবে পরিচিত ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী জেলা পরিষদের নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এমডি আসলাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করার পর রহস্যজনকভাবে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সদর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নগরজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অসুস্থতার ঠুনকো অযুহাতে রাতের আঁধারে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার কেসিসি মার্কেটের সামনে থেকে এম.ডি আসলাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে খুলনা সদর থানা পুলিশ। তিনি খুলনা সদর থানার নন-এফআইআর প্রসিকিউশন মামলা নং ৩৫৬/২৫ (তারিখ ৮/১২/২৫), দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারায়জারি হওয়া ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গ্রেপ্তারের কিছু সময় পরই আসলাম হোসেনকে থানায় নিয়ে কিছু সময় পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। বিশেষ করে, ওয়ারেন্টভুক্ত একজন আসামীকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ না করে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় অর্থ লেনদেনের অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী আসলাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে গ্রেপ্তারের পর তিনি গুরুতর অসুস্থতার কথা জানান। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তাকে একজনের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। কোনো আর্থিক লেনদেন হয়নি বলে দাবি করেন ওসি।
তবে পুলিশের এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট নন আইনজ্ঞ ও সচেতন মহল। তাদের প্রশ্ন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী অসুস্থ হলে তাকে আদালতে সোর্পদ করে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল, কোনো ব্যক্তির জিম্মায় ছেড়ে দেওয়ার আইনগত ভিত্তি কী?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আইনজীবী বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করা বাধ্যতামূলক। অসুস্থতার অজুহাতে তাকে ছেড়ে দেওয়া আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এটি যদি সত্যি হয়, তাহলে বিষয়টি গুরুতর শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছেন সচেতনমহল। তাদের দাবি, খুলনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ হারুন অর রশিদের সময়কালে সংঘটিত নানা দুর্নীতির সঙ্গে এমডি আসলাম হোসেনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এমন একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা দুর্নীতিবাজদের আরও উৎসাহিত করবে।
ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, যদি সত্যিই অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে আসামিকে ছেড়ে দেওয়া হয়ে থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর জনগণের আস্থা আরও কমে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসানের ব্যবহৃত নম্বরে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি তিনি।
এএইচ
আরও পড়ুন










