ঢাকা, সোমবার   ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি,বিশুদ্ধ পানির সংকট

প্রকাশিত : ২১:০৪, ১৪ জুলাই ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি আগে থেকে আরও অবনতি হয়েছে। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর পানি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে বাড়ছে পানিবন্দী হয়ে পরেছে লাখো মানুষ। নিন্মাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় লোকজন উঁচুবাড়ী, বাঁধ বা রাস্তায় আশ্রয় নিচ্ছে। পানিতে নলকুপ ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।  

এছাড়া শৌচাগার ডুবে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে মানুষ। বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় প্রায় শতাধিক প্রাইমারী বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুর পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলায় ৭৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫২টি ইউনিয়নের ২৬২টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ৫৩ হাজার ৫৫১টি পরিবারের ২ লাখ ১৪ হাজার ১০৪ জন মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। ২৮৫টি স্কুলে বন্ধ হয়ে গেছে পাঠদান। এছাড়াও ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো. রুমানুজ্জামান জানান, রোববার দুপুর পর্যন্ত ধরলা নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদ সীমার ৮১ সে. মিটার, ব্রহ্মপূত্রের পানি ৩৩ সে.মিটার বেড়ে ৭৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এদিকে তিস্তার পানি ২ সেন্টিমিটার করে গিয়ে ২০ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চর, দ্বীপচর, নদী সংলগ্ন গ্রামের সবগুলোই এখন পানিতে ভাসছে। জেলায় ৭৭টিন অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮০০ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে প্রধান সড়ক জলমগ্ন হওয়ায় কুড়িগ্রাম ও ঘোগাদহ থেকে যাত্রাপুর যানচলাচল সম্পূর্ণরুপে বন্ধ হয়ে গেছে। সদরের হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব বাঁধ যেকোন মূহুর্তে ভেঙে যেতে পারে। এতে এই এলাকার কয়েক’শ পরিবার জলমগ্ন হয়ে পরবে। রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা ও রামহরি মৌজার নদী তীরবর্তী এলাকা এখন পানিবিন্দ। পানি ঢুকছে লোকালয়ে।

কুড়িগ্রামে বন্যায় দেড় হাজার হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে আমনের বীজতলা, আউস, সবজি, কলা  ভুট্টা ও পাট। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকার ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান,ক্ষতির পরিমান নিরুপন ও কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় এক হাজার ২৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে পানি ওঠায় এখন রোববার পর্যন্ত ৯২টি বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।

কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাফিজুর রহমান জানান, ধরলা ও ব্রহ্মপূত্রের পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।এর ফলে মানুষের মধ্যে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। আমরা পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোয় ৫০ মে.টন চাল, নগদ ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা বিতরণ শুরু হয়েছে।

এছাড়াও সাড়ে চার’শ টন চাল ও ৫ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরী ভিত্তিতে আরও এক হাজার মে.টন জি আর চাল, ২০ লক্ষ টাকা এবং ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

এনএম/কেআই


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি