ঢাকা, শনিবার   ২৬ জুলাই ২০২৫

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অবস্থান 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২০:৫৩, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের কানিকশালগাঁও গ্রামে বিয়ের দাবিতে এক তরুণী ১০দিন ধরে ছাত্রলীগের এক পলাতক নেতার বাড়িতে অবস্থান করছে।এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম সজলের(২৫)বাড়িতে চলছে এই অবস্থান।

সজলের বাবা হামিদুল ইসলাম জানান, ওই তরুণী গত ৩১ অগাস্ট তাদের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। 

ওই তরুণী জানায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সজল আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। আমাকে বিয়ে করতে আমি তাকে অনেক অনুরোধ জানিয়েছি। কিন্তু সে শুধু টালবাহানা করেই চলছে।ধর্ষণের অভিযোগে এর আগে আমি সজলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছিলাম। ওই মামলায় পুলিশ তাকে আটক করেছিল।
 
জেলে থাকার সময় সজল ওয়াদা করে বলেছিল, সে যে দিন জেল থেকে বের হবে সেদিন আমি যেন তার বাড়িতে আসি। সজল যেদিন জামিনে মুক্ত হয়েছে আমি সেদিন এসেছি। কিন্তু সে আমায় বিয়ে না করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। তাই আমি বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে অবস্থান করছি।আমি তাকে বিয়ে করবই। অন্যথায় তার বাড়িতেই আমি আমার জীবনটা শেষ করে দিব। 

এ বিষয়ে সজলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সে সাড়া দেয়নি।
         
সজলের মা সাহেরা বানু বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল এটা সত্য।গত ২৪ জুন ওই মেয়ের পরিবারের লোকজন আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে তাদের বাড়িতে আটকে রেখেছিল। তারা বিয়ের জন্য সজলকে চাপ দিয়ে আসছিল। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ওই মেয়ে ২৬ জুন সজলের বিরুদ্ধে রুহিয়া থানায় ধর্ষণ মামলা করে ।
        
সজলের বাবা হামিদুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণ মামলায় আমার ছেলে ৬১ দিন কারাগারে ছিল।উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে গত ৩১ আগস্ট সজল বাড়ি আসার কিছুক্ষণ পর ওই মেয়ে আমাদের বাড়িতে চলে আসে। সে তার পরিবারের লোকজনের সহায়তায় বাড়ির একটি কক্ষে ঢুকে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করছে। তাকে বাঁধা দিলে তারা আমার স্ত্রী, মেয়ে ও শাশুড়িকে মারধর করে।এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে মেয়েটি আমাদের বাড়িতেই রয়েছে।
       
ওই তরুণীও পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সজলের পরিবারের সদস্যরা আমাকে মারধর করেছে।

রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক বাবু, ২১ নম্বর রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সেন ও সালন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুব আলম মুকুল বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করলেও তাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

মনিরুল হক বাবু বলেন, মেয়ে পক্ষ সমাধানে রাজি হয়েছে তবে ছেলে পক্ষ রাজি নয়।আমারা অনেকবার ছেলে পক্ষকে সমাধানের কথা বলার পরও তাদের দিক থেকে তেমন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। 
        
বিষয়টি খুব দ্রুত সমাধানের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ২১ নম্বর রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সেন। 

ওই তরুণীর করা ধর্ষণ মামলার অগ্রগতি জানতে চাইলে রুহিয়া থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বলেন, আমরা এখনও মেডিকেল রিপোর্ট পাইনি। সেটা পেলে অগ্রগতি বলা যাবে।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার পারভেজ পুলক জানায়, সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকায় ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সজলকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
কেআই/      


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি