ঢাকা, শুক্রবার   ১০ মে ২০২৪

১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত চা-শ্রমিকদের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৫, ২২ আগস্ট ২০২২

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হবে, এমন আশ্বাস পেয়ে চা-শ্রমিকরা আগের ১২০ টাকা মজুরিতেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রোববার (২১ আগস্ট) মধ্যরাত পর্যন্ত চা-বাগানের শ্রমিকদের বৈঠক হয় মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে। এ বৈঠকের পর জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে সোমবার (২২ আগস্ট) থেকে আগের মজুরিতেই কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শ্রমিকরা।

বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, চা-শ্রমিকরা যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরম শ্রদ্ধা করেন তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আজকের এ সিদ্ধান্ত। চা-শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রেখে তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য যে সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা সেটাই মেনে নেব।’ 

জানা গেছে, রাতের বৈঠকে চা-শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ছাড়াও পুলিশ সুপার ও বিভাগীয় শ্রম কর্মকর্তারা অংশ নেন। চা-শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা ও শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক প্রাণ গোয়ালাসহ একাধিক নেতা ছিলেন।

আরও জানা যায়, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হওয়ার জন্য চা-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আবেদন করবেন যা জেলা প্রশাসক কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপস্থাপিত হবে। চা-শ্রমিকদের অন্যান্য দাবিসমূহ লিখিত আকারে জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিল করবেন। জেলা প্রশাসক তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাবেন। 

বাগানমালিকরা বাগানের প্রচলিত প্রথা মোতাবেক ধর্মঘটকালীন মজুরি শ্রমিকদের পরিশোধ করবেন বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

গত ২০ আগস্ট মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে চা-শ্রমিক ও সরকারের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নতুন মজুরি নির্ধারণ করা হয় ১৪৫ টাকা। এরপর চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার কথা জানান চা-শ্রমিক নেতারা। কিন্তু সাধারণ চা-শ্রমিকদের তুপের মুখে পড়ে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন চা-শ্রমিক ইউনিয়ন। 
 
এদিকে, চা-শ্রমিকদের বিরল ধর্মঘটে ১২ দিন ধরে সারাদেশের বাগান থেকে চাপাতা উত্তোলন, কারখানায় প্রক্রিয়াজাত ও উৎপাদন বন্ধ থাকে। এতে স্থবির হয়ে পড়ে দেশের চা-শিল্প। দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকায় উন্নীত করার দাবিতে দেশের ২৪১ চা-বাগানে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। 

এর আগে তারা প্রতিদিন ২৩ কেজি চাপাতা উত্তোলন করে ১২০ টাকা মজুরি পেতেন।

উল্লেখ্য, এখন চা উৎপাদনের ভরা মৌসুম। গত কয়েক দিনে গাছে গাছে সবুজ পাতা আর কুঁড়ি অঙ্কুরিত হয়েছে। কারখানায় নিয়ে এসব পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণের ঠিক এ সময়ে স্থবির হয়ে পড়ে চা-শিল্পের যাবতীয় কর্মযজ্ঞ। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোকসান হয়। এর মধ্যে কেবল মৌলভীবাজারেই নষ্ট হয়ে গেছে ৩১ কোটি টাকার চাপাতা।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি