ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪

মিন্নির আইনজীবীর গোপন বৈঠক নিয়ে তোলপাড়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২৫, ২২ জুলাই ২০১৯

বরগুনায় আলোচিত রিফাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু কলকাঠি নাড়ছেন বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছে মিন্নির পরিবার। তার ছেলে সুনাম দেবনাথ প্রকাশ্যে খুনের মামলাটি প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেনের দাবি, রিমান্ডে তার মেয়েকে নির্যাতন করে আদালতে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। পুলিশ যা শিখিয়ে দিয়েছে তাই বলতে বাধ্য হয়েছেন মিন্নি। না হলে তাকে আরো ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল পুলিশ।

মিন্নির জামিনের জন্য বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী আসলামকে নিয়োগ করেন মোজাম্মেল হোসেন। গত শনিবার ঢাকা থেকে যাওয়া আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিনিধিদল আসলামের সঙ্গে কথাও বলে। কিন্তু ওই দিন রাতেই বরগুনা সদর রোডে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ব্যক্তিগত ল চেম্বারের পেছনের একটি কক্ষে শম্ভুর সঙ্গে আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলামের বৈঠক হয়। তার সঙ্গে বরগুনা বারের সভাপতি আবদুর রহমান নান্টুও ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আবদুর রহমান নান্টু এবং মাহবুবুল বারী আসলাম রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে সংসদ সদস্য শম্ভুর ল চেম্বারে প্রবেশ করেন। এমপিপুত্র সুনাম দেবনাথ ও বরগুনার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আক্তারুজ্জামান বাহাদুরও সেখানে ছিলেন। তারা কক্ষে প্রবেশের পর ভেতর থেকে সুনাম দরজা আটকে দেন। পরে রাত ১০টা ১৫ মিনিটে মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম, নান্টু ও এপিপি আক্তারুজ্জামান বাহাদুর সংসদ সদস্যের চেম্বার ত্যাগ করেন।

আসলে রিফাত হত্যার ঘটনায় মিন্নিকে আসামি করা, রিমান্ড শুনানিতে মিন্নির পক্ষে আইনজীবীদের দাঁড়াতে অপারগতা প্রকাশ, তড়িঘড়ি করে তার স্বীকারোক্তি আদায় এবং সর্বশেষ মিন্নির জামিন শুনানির আগের দিন রাতে শম্ভুর সঙ্গে তার আইনজীবীর গোপন বৈঠক- এসব ঘটনায় সমালোচনা হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নও উঠেছে।

এ বিষয়ে মাহাবুবুল বারী আসলাম বলেন, এমপি শম্ভু একজন সিনিয়র আইনজীবী। তার সঙ্গে দেখা করেছি। তবে রিফাত হত্যা মামলা নিয়ে কোনও কথা হয়নি।

এদিকে, মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী এ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

শম্ভুর সঙ্গে আইনজীবীর বৈঠক হওয়ায় এর সমালোচনা করে মোজাম্মেল সাংবাদিকদের বলেন, রাতের সেই বৈঠকের পরেই বুঝেছিলাম, ন্যায়বিচার আমার মেয়ের কপালে নেই। যদি থাকত তাহলে আসামি শনাক্তের কথা বলে আমার মেয়েকে মামলায় জড়ানো হতো না।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন নেওয়াজ শরিফ রিফাতের উপরে প্রকাশ্য দিবালোকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। আলোচিত এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে মিন্নিসহ ১৪ জন অভিযুক্ত রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া এ মামলার দুজন অভিযুক্ত রিমান্ডে রয়েছেন। এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি