ঢাকা, সোমবার   ১৮ আগস্ট ২০২৫

মূল্যস্ফীতি আরও কমার আশা পরিকল্পনামন্ত্রীর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৩, ৪ আগস্ট ২০২২

Ekushey Television Ltd.

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। বর্তমান বৈশ্বিক সঙ্কটের সময়ে যাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মনে করছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুারোর (বিবিএস) হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ মাসে ‘পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে’ সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার হয়েছে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। 

বিশ্ববাজারে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে দেশে মূল্যস্ফীতির হার গত জুন মাসে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়। জুলাই মাসে কমে এটি ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান পরিসংখ্যান ব্যুারোর এই প্রতিবেদন তুলে ধরে অগাস্ট মাসে মূল্যস্ফীতির এই হার আরও একটু কমার আশা প্রকাশ করছেন। তিনি বলেন, “আমি গণক নই, তবে আমার ধারণা কমার একটা লক্ষণ আমি লক্ষ্য করছি।”

তিনি জানান, জুলাই মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার আগের মাসের তুলনায় ০.৮ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে। তবে গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় ২ দশমিক ১২ শতাংশ পয়েন্ট বেশি। গত বছরের জুলাই মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ছিল। 

সরকার এ বছর মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। মহামারীর ধাক্কা সামলে অর্থনীতির গতি বাড়ায় গত বছরের শেষ দিক থেকেই মূল্যস্ফীতি ছিল বাড়তির দিকে। চলতি বছরের শুরুতে ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে জ্বালানি ও খাদ্যমূল্য বাড়তে শুরু করে। তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে।
 
পরিসংখ্যান ব্যুারোর প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, গত জুলাই মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ হয়েছে, যা জুন মাসে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ ছিল। আর খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি জুন মাসে ছিল ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এক মাসের ব্যবধানে সেটি সামাণ্য বেড়ে ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছে।

জুলাই শেষে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার কমে ৮ দশমিক শূন্য ০২ শতাংশ হয়েছে, যেখানে শহরে এই হার ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। গ্রামে খাদ্য খাতে ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ মূল্যস্ফতি হয়েছে জুলাই মাসে। আর খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর শহরাঞ্চলে খাদ্য উপখাতে ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে।

জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে আসাকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে বর্ণনা করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি যে শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে না, এটা তার ‘প্রমাণ’। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। পুরো অর্থনীতিটাকে এটা রিফ্লেক্ট করে এটা অর্থনীতির একটা প্রতিচ্ছবি। এই মূল্যস্ফীতি পুরো অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলে।”

জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি যতটা কমেছে, সেই হার ‘অনেক কম’ বলে মনে হলেও বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে এটা ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শুধু যে কমেছে তা নয়, মাথার ছোবলটা একটু নুয়েছে। এটা আরও নুয়ে আসবে।”
 
তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধের মধ্যেও ইউক্রেইন থেকে খাদ্য নিয়ে জাহাজ ছাড়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে জাহাজ ভেসে বেড়াচ্ছে, আমরাও পাব। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য পণ্যের দাম কিছুটা ফল করেছে। এই বেনিফিট এখন আরও আসবে।”
 
জুন থেকে জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কীভাবে কমল-এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “মূল কারণ হচ্ছে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমে আসা। সয়াবিন তেল আমাদের খাদ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পণ্যটির দাম কিছুটা কমে আসায় এর প্রভাব পড়েছে। চালের দাম কমতে শুরু করা আরেকটা কারণ।”

তিনি বলেন, “দেশে হঠাৎ চালের দাম বাড়তে শুরু করলে সরকার গত মাসে চাল আমদানির সুযোগ করে দেয়। এরপর থেকে চালের দামও কমতে শুরু করেছে। প্রধানত এই দুই পণ্যের দাম কমার কারণেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমতে শুরু করেছে।”

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি