ঢাকা, মঙ্গলবার   ২১ মে ২০২৪

আরও এক বছর সময় বাড়ছে অ্যাকর্ডের

প্রকাশিত : ১২:৫৫, ৯ এপ্রিল ২০১৯

পোশাক খাতের সংস্কারবিষয়ক ইউরোপের ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশের আবারও মেয়াদ বাড়ছে। ক্রেতাদের এ জোট আরও এক বছর থেকে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছে। পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ সম্মত হওয়ায় অতিরিক্ত এক বছর সময়ের জন্য মেয়াদ বাড়াতে রাজি হয়েছে সরকার। তবে এ-সংক্রান্ত ৮টি শর্ত মেনে নিয়েই এ দেশে কাজ করতে হবে অ্যাকর্ডকে। তিন মাস পর এসব শর্তে কাজ করতে রাজি হয়েছে অ্যাকর্ড।

সম্প্রতি আইন ও শ্রম মন্ত্রণালয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই), বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও চার জন ক্রেতা প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত ট্রানজিশন অ্যাডভাইজরি কমিটিকে অ্যাকর্ডের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সিদ্ধান্তের কথা ইতিমধ্যে আদালতকে জানানো হয়েছে। আগামী ১৫ এপ্রিল এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেবেন আদালত।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধের কারণে অ্যাকর্ডকে অতিরিক্ত সময় কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। ইউরোপের মধ্যে বাংলাদেশের পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে জার্মানি। অ্যাকর্ডের প্রস্তাব অনুযায়ী ২৮১ কর্মদিবস এ দেশে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ২৮১ কর্মদিবস মানে ছুটিসহ প্রায় এক বছর। রায়ের দিন থেকে নতুন মেয়াদ শুরু হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এর আগে অ্যাকর্ডের বিরুদ্ধে চলা মামলার একপর্যায়ে সরকারের দেওয়া আট শর্ত মানতে রাজি কি-না তা অ্যাকর্ডের কাছে জানতে চেয়েছেন আদালত। এই সিদ্ধান্ত জানাতে আদালতের কাছে কয়েক দফা সময় চায় অ্যাকর্ড।

উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ শর্ত মানতে রাজি হয়েছে অ্যাকর্ডের স্টিয়ারিং কমিটি। সম্প্রতি উদ্যোক্তাদের তা জানানো হয়েছে।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর একই বছরের ১৫ মে ইউরোপের ২০টি দেশসহ উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার দুই শতাধিক ব্র্যান্ড এবং খুচরা ক্রেতা ও ট্রেড ইউনিয়নের সমন্বয়ে অ্যাকর্ড গঠিত হয়। গত বছরের ৩১ মে অ্যাকর্ডের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হয়। তবে কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ছয় মাস সময় দেওয়া হয়। বর্ধিত সেই মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩০ নভেম্বর। গত ৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন অ্যাকর্ডের কার্যক্রম ৩০ নভেম্বরের মধ্যে গুটিয়ে নিতে অ্যাকর্ডকে নির্দেশ দেন। এই রায় পরিবর্তন এবং মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য আদালতে আবেদন করে অ্যাকর্ডের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত ৮ বার শুনানি হয়েছে।

আট শর্তের মধ্যে রয়েছে- কোনো কারখানার সংস্কার দুর্বলতা কিংবা অ্যাকর্ড থেকে বাদ পড়লে ওই কারখানার মালিকের অন্য কারখানাকে জবাবদিহিতা কিংবা শাস্তি দেওয়া যাবে না। ট্রানজিশন মনিটরিং কমিটির মতামত ছাড়া কোনো কারখানাকে অ্যাকর্ড থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের পোশাক খাতে কোনো রকম নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এমন নীতি নেওয়া যাবে না। ডিআইএফইকে পরিদর্শন সংক্রান্ত একমাত্র প্ল্যাটফর্ম হিসেবে মানবে অ্যাকর্ড। এর বাইরে অন্য কোনো প্ল্যাটফর্ম করা যাবে না। এ ছাড়া নিরাপত্তা পরিদর্শনে অভিন্ন মানদণ্ড মেনে চলবে অ্যাকর্ড এবং তাদের ক্রেতারা। অ্যাকর্ড কিংবা অপর ক্রেতাজোট অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে অনুমোদন করা কোনো নকশা মাঝপথে পরিবর্তন করা যাবে না। শ্রম অধিকারের নামে কোনো কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করবে না অ্যাকর্ড। সরকারের পক্ষ থেকে এসব শর্ত আদালতের দৃষ্টিতে এনেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। আদালত এ বিষয়ে সংশ্নিষ্টদের মতৈক্যে আসতে বলেছে। এরপর ট্রানজিশন অ্যাডভাইজরি কমিটি গঠিত হয়।

 

এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.





© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি