শেখ হাসিনার পক্ষে ববি শিক্ষকদের গোপন সভা ফাঁস, সমালোচনার ঝড়
প্রকাশিত : ০৮:১৪, ২১ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ০৯:৩৬, ২১ এপ্রিল ২০২৫

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) শিক্ষকদের একটি গোপন অনলাইন বৈঠকের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ অবলম্বন করেন এবং জুলাই আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।
এ ঘটনায় শিক্ষাঙ্গনজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা, যার প্রভাব শিক্ষার্থীদের মধ্যেও পড়েছে।
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত প্রায় দেড় ঘণ্টার ওই জুম মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বৈঠকটি হয়। সম্প্রতি সেই ভিডিওটি ফাঁস হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, তারা যেকোনো মূল্যে সরকার পতনের প্রচেষ্টা রুখে দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সভাটি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আজকের জরুরি সভার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবদুল বাতেন চৌধুরী।”
এরপর ড. বাতেন চৌধুরী বলেন, “দেশ এক সংকটকাল অতিক্রম করছে। এ সময়ে আমাদের সবাইকে নির্দিষ্ট অবস্থান নিতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে শেখ হাসিনার ভূমিকা রয়েছে, তাই তাঁর বিপক্ষে যাওয়া অকৃতজ্ঞতা। তিনি বলেন, ছাত্রদের এক দফা দাবির কোনো ভিত্তি নেই। আমি আন্দোলনকারীদের ঘৃণা করি ও তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করছি।’
ড. বাতেন চৌধুরী দাবি করেন, “আমরা সবাই আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হিসেবে আজ শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থান নেওয়ার সময় এসেছে।”
এ সময় একে একে অন্যান্য শিক্ষকরা শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দেন। ব্যতিক্রম ছিলেন শুধু ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীন। তিনি বলেন, “আমাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত ছিল—কোনো শিক্ষার্থী যেন আহত, হয়রানির শিকার বা গুলিবিদ্ধ না হয়। আমরা এখনও সেই নীতিতে আছি।”
ড. মুহসিনের বক্তব্যের পর তাকে তোপের মুখে ফেলেন অন্যান্য শিক্ষকরা। বিশেষ করে ড. মো. খোরশেদ আলম, ড. মো. আব্দুল কাইয়ুম ও ড. মো. আবির তার বক্তব্যের প্রতিবাদে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।
ভিডিওটিতে আরও দেখা যায়, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন দিল আফরোজ খানম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “গত দুদিন ধরে গলা ধরে আসছে, কিছু বলতে পারছিলাম না। আমি বিশ্বাস করি, এই মুহূর্তে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।”
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি, উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
ভিডিওটি সম্প্রতি ফাঁস হলে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া।
এএইচ
আরও পড়ুন